গাজীপুরের মনিপুর ও তালতলীতে হাজারো ‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ’ ফের চালু!

আলোকিত প্রতিবেদক : শুধু নিচ তলা বা টিনশেড নয়। চার-পাঁচ তলা বাড়িতেও জ্বলছে গ্যাসের চুলা।

তা-ও আবার অল্প-স্বল্প নয়। ছোট-বড় বাড়ির সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি।

গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিকেবাড়ি তালতলী জনবহুল এলাকা। তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগের অন্যতম জোন এটি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই এলাকার বাসা-বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ গ্যাস চলছে। কয়েক বছর আগে বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানায় মামলাও হয়। কিন্তু কিছুদিন পর আবার সংযোগ চালু করে দালাল চক্র।

সর্বশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর দুটি পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় হাজার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তিনজনের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা।

এর তিন দিন পর মির্জাপুর রোডের পশ্চিম পাশের সংযোগগুলো ফের চালু হয়। আর বেঙ্গল কারখানার দক্ষিণ পাশের দেওয়ান ফার্মেসির পূর্ব পাশের গলি দিয়ে ২০টি রাইজার চালু হয় গত ৬ জানুয়ারি রাতে।

এলাকাবাসী জানান, কিছু বাড়িতে একাধিক রাইজার আছে। রাইজারপ্রতি আট হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। থানা পুলিশ ম্যানেজ থাকায় কোন সমস্যা হয়নি।

তারা আরও জানান, স্থানীয় ইউপি মেম্বার রমজান আলী সংযোগে সহযোগিতা করেছেন। তার বাড়ির গ্যাসও অবৈধ।

অপর বাড়িগুলোর মধ্যে আলোচিত হল হামিদ হাজির বাড়ি, সাত্তার কাজীর বাড়ি, কাসেমের বাড়ি, হাবিবুর হাজির বাড়ি, আবুল হাজির বাড়ি, মাসুদুল কবিরের বাড়ি, শাওন বেপারীর বাড়ি, খোরশেদের বাড়ি, মান্নানের বাড়ি ও কাইয়ুমের বাড়ি।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, প্রতি কোরবানির ঈদের আগে থানার নামে রাইজারপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে উঠানো হয়। গ্যাস ছাড়া রুম বা ফ্ল্যাট ভাড়া কম হলেও কয়েকজন মালিক অবৈধ পথে পা বাড়াননি।

মেম্বার রমজান আলী নিজের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আলোকিত নিউজকে বলেন, আপনি নিউজ করেন। প্রশাসন আসলে আমি সাথে থেকে সব লাইন কেটে দেব।

অপরদিকে পার্শ্ববর্তী ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের মনিপুর এলাকায়ও এক হাজারের বেশি বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অন্তত তিনবার অভিযান চালিয়ে সংযোগগুলো বিচ্ছিন্ন করলেও তা ফের চালু হয়।

উল্লেখযোগ্য কিছু বাড়ি হল গোলজার খানের বাড়ি, সাহিদের বাড়ি, সানির বাড়ি, মোশারফের বাড়ি, মহসিনের বাড়ি, আলমের বাড়ি, লাল মিয়ার বাড়ি ও জামানের বাড়ি।

এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাসের গাজীপুর বিপণন কার্যালয়ের ডিজিএম সত্যজিৎ ঘোষের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, গ্যাসের অবৈধ ব্যবহারে সরকার প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই দুষ্কর্মে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া উচিত।

আরও খবর