কালিয়াকৈরে দিন-দুপুরে ‘বন কেটে’ প্লট বিক্রির পাকা রাস্তা!
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সংরক্ষিত আকাশমনি বাগানের গাছ কেটে প্লট বিক্রির পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।
কালিয়াকৈর রেঞ্জের মৌচাক বিট এলাকার দক্ষিণ ভান্নারায় সোমবার (২ জানুয়ারি) দিন-দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে জানা যায়, বনফুল বাজারের পূর্ব দিক দিয়ে অল্প দূরে উর্মি নিটওয়্যার কারখানা। কারখানার উত্তর দিকে বৃহৎ আয়তনের সৃজিত আকাশমনি বাগান। বাগানের উত্তর পাশে নিচু জমি। জমির উত্তর ও পশ্চিম পাশেও বনভূমি।
সেখানে ৩৫ শতাংশ জমি কেনার বায়না করেছেন স্থানীয় দুলাল ও হুমায়ুনসহ চারজন। তারা প্রথমে বাগানের কিছু গাছ কেটে রাস্তা তৈরি করেন। সেই রাস্তা দিয়ে মাটি বহন করে জমি ভরাট করা হয়।
পরে সোমবার প্রকাশ্য দিবালোকে তারা ১০ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট ১২০ ফুট দৈর্ঘ্যের রাস্তাটিতে ইট বিছিয়ে বালু দিয়ে ঢেকে দেন। এরপর লোকজন জমি দেখা শুরু করেন।
স্থানীয়রা জানান, দুলাল গং ওই জমি প্লট আকারে বিক্রির প্রক্রিয়া করেছে। প্রতি শতাংশের দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে চার লাখ টাকা। গাছ কেটে ও ডিমারকেশন ছাড়াই কয়েক দিন ধরে মাটি ভরাটের কাজ চললেও বিট অফিস কিছুই করেনি।
তারা আরও জানান, প্লট ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বিট অফিসের অনুমতি নিয়েই রাস্তা করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া কেউ টিনের বেড়াও দিতে পারে না।
এদিকে কিছুদিন আগে রাস্তাটির দক্ষিণ পাশে বাগান ঘেঁষে ফাউন্ডেশন দিয়ে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন। বাগানের ভেতরে ইট-বালু রাখায় গাছপালার ক্ষতি হচ্ছে।
প্রতিবেশীরা জানান, মোসলেম উদ্দিন ডিমারকেশন করেননি। গাছপালার ক্ষতি হলেও বিট অফিস কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, গাছ কাটা, ডিমারকেশন ছাড়া মাটি ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ-এসবে বনের লোকদের সাথে লাখ লাখ টাকা লেনদেন হয়। টাকা ছাড়া কেউ কিছু করলে ভাঙচুর ও মামলা দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে দুলাল গং ও মোসলেম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
রেঞ্জ কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা আশরাফুল আলম দোলনকে বিষয়টি জানালে তিনি বিট কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
বিট কর্মকর্তা শহীদুল আলম আলোকিত নিউজকে বলেন, আমি নতুন এসেছি। এখন সেটেলমেন্ট রেকর্ডের ব্যস্ততায় আছি। ইট থাকলে তুলে নিয়ে আসব, গাছ কাটা পেলে মামলা দিব।
আরও পড়ুন : গাজীপুরের কাশিমপুরে ‘বনের বুক চিরে’ গ্যাস কারখানার রাস্তা!