গাজীপুরের ধলাদিয়ায় কোটি টাকার বনভূমি দখল করে মার্কেট!
আলোকিত প্রতিবেদক : প্রথমে বনভূমি দখল। পরে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া আদায়। এক পর্যায়ে গড়ে উঠল বড়সড় মার্কেট।
ঢাকা বন বিভাগের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিটের ধলাদিয়া এলাকার চিত্র এটি। সেখানে কয়েক বছর ধরে অবাধে চলছে এই বাণিজ্য।
সরেজমিনে জানা যায়, ঢাকা-কাপাসিয়া সড়কের ডার্ড কম্পোজিটের পূর্ব পাশে গ্লোব মোজা কারখানা। কারখানাটির দক্ষিণ পাশে মোজা ফ্যাক্টরি রোড। রোডের দুই পাশে সংরক্ষিত বনভূমি।
সেই বনভূমিতে অন্তত ৩০টি ভিটি পাকা টিনশেড দোকান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে মুদি দোকান বেশি। আরও দোকান নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে।
দখলদারদের মধ্যে অন্যতম শ্রীপুরের নোয়াগাঁও এলাকার ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে ইমরান হোসেন। রাস্তার পশ্চিম পাশে তার দখলীয় বনভূমির পরিমাণ প্রায় তিন গন্ডা। তাতে সাতটি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
ইমরান গত মাসে বালু ফেলে আরও কয়েক শতাংশ বনভূমি দখলের চেষ্টা করেন। আগেও দুবার টিনশেড দোকান নির্মাণের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগের কারণে বিট অফিস করতে দেয়নি।
অবশেষে সেখানে বাগান করা হয়েছে। তবে দখলীয় বনভূমি উদ্ধারে কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
রাস্তার পূর্ব পাশে মোস্তফা কামাল, আবদুল খালেক, জামাল হোসেন ও আনেছা বেগমসহ ছয়জন দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। তাদের দখলীয় বনভূমির পরিমাণ প্রায় আধা বিঘা।
স্থানীয়রা জানান, একেকটা দোকানের ভাড়া মাসে দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। জামানত ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত। আশপাশে বনের জমি দখল করে বাসা ভাড়ার ব্যবসাও চলছে।
তারা আরও জানান, ওই স্থানে বর্তমানে বিঘাপ্রতি জমির বাজারমূল্য দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। সে হিসাবে রাস্তার দুই পাশে দখলীয় বনভূমির মূল্য দাঁড়ায় প্রায় দেড় কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে ইমরান হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বনের জমিতে কোন দোকান নেই বলে দাবি করেন। পরে কথা শেষ না হতেই সংযোগ কেটে দেন।
এদিকে রাস্তার পশ্চিম পাশে নতুন সৃজিত আকাশমনি বাগান সংলগ্ন বনভূমি দখল করে একটি হোটেল করেছেন নজরুল ইসলাম। চার-পাঁচ মাস আগে হোটেলটি করা হলেও বিট অফিস কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, নজরুল বিট অফিসের সাথে কথা বলেই হোটেল করেছেন। শুনেছি এক লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ ব্যাপারে নজরুল ইসলামের সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিট কর্মকর্তা আইয়ুব খান ইতিপূর্বে আলোকিত নিউজকে বলেছেন, কেউ বনভূমি দখল করতে পারবে না। ইমরানের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে।