গাজীপুরের সাফারি পার্কে ‘বাণিজ্য রক্ষায়’ এসিএফ তবিবুরের দৌড়ঝাঁপ!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হচ্ছে না।

লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য ধরে রাখতে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ।

তার আশীর্বাদ পেয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্যমতে, এসিএফ তবিবুর রহমান প্রায় তিন বছর ধরে সাফারি পার্কে আছেন। তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে পার্কের স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।

পার্কের মেইন গেট থেকে উত্তর দিকে বাঘ ও সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্ট দুটি ইজারা নিয়েছেন মেসার্স মাইছা এন্টারপ্রাইজের মালিক আকরাম হোসেন।

সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্টুরেন্টের সামনে আকাশমনি বাগানের ভেতরে দর্শনার্থীদের আপ্যায়নে চেয়ার-টেবিল সংবলিত দুটি বড় প্যান্ডেল স্থাপন করা হয়েছে। কাটা হয়েছে কয়েকটি আকাশমনি ও গজারি গাছ।

এ ছাড়া বাঘ পর্যবেক্ষণ রেস্টুরেন্টের পূর্ব পাশে বাগানের ভেতরে দুটি চালা তুলে ও উন্মুক্ত স্থানে কয়েকটি মাটির চুলায় লাকড়ি দিয়ে চলে রান্নাবান্না। আগুনের তাপ ও ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাছপালা।

অথচ ইজারার চুক্তিপত্রের শর্তে বলা হয়েছে, ইজারাদার রেস্টুরেন্টের সন্নিকটে বা বাইরের উন্মুক্ত স্থানে বাণিজ্যিক উদ্দেশে কোন প্রকার ভাসমান দোকান, সামিয়ানা টানানো, চেয়ার-টেবিল স্থাপন কিংবা পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন না। শর্ত ভঙ্গ করলে কার্যাদেশ বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কিন্তু ইজারাদার শর্ত ভঙ্গ ও দীর্ঘদিন ধরে বনের ক্ষতিসাধন করে ব্যবসা করলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ পালন করছে নীরব ভূমিকা।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, পার্কে নিয়মের বাইরে একটি সাধারণ দোকান দিলে এসিএফ তবিবুর রহমানকে এক বছরের জন্য দুই-তিন লাখ টাকা দিতে হয়। বড় কাজে লেনদেন বেশি। তার অনুমতি ছাড়া ইজারাদার বা অন্য কারও পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।

এদিকে ইজারা ছাড়াই শিশু পার্কের সামনের আকাশমনি বাগানে ত্রিপল দিয়ে খাবার ও পানীয় বিক্রির একটি দোকান দেওয়া হয়েছে। সাথে সাতটি টেবিলে চেয়ার স্থাপন করে বাড়ানো হয়েছে পরিসর।

ফুড কোর্ট-১-এর ইজারাদার মেসার্স জুনায়েদ এন্টারপ্রাইজ পেয়েছে আরও বেশি সুবিধা। সামনে ১৬টি টেবিল ঘিরে চেয়ার স্থাপন ও দুটি দোকান ভাড়া দেওয়া হয়। সম্প্রতি তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে।

বিষয়টির ওপর গত ৮ জানুয়ারি আলোকিত নিউজ ডটকমে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে চলে তোলপাড়।

পার্ক সূত্র জানায়, নিউজের পর মাইছা এন্টারপ্রাইজের প্যান্ডেল ও চুলার সরঞ্জাম এবং ওই দোকানগুলো অপসারণ করার কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছিল। পরে তা থমকে গেছে।

এর আগে এসিএফ তবিবুর রহমান আলোকিত নিউজকে বলেছিলেন, দোকানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই করা হয়নি।

এ ব্যাপারে পার্কের প্রকল্প পরিচালক ও উপ-প্রধান বন সংরক্ষক জাহিদুল কবির জুয়েল আলোকিত নিউজকে বলেন, আমি গিয়ে প্যান্ডেল ও দোকান দেখেছি। এগুলো অপসারণের জন্য এসিএফকে নোটিশ দিতে বলেছি।

তিনি আরও বলেন, তারা নিজেরা না সরালে আমরা ভেঙে দিব। আমরা চাচ্ছি যে রেস্টুরেন্ট ভেতরে আর চালাব না। কারণ ইজারাদাররা কথা শুনতে চায় না।

আরও পড়ুন : গাজীপুরের সাফারি পার্কে এসিএফ তবিবুরের ‘দোকান ও প্যান্ডেল বাণিজ্য’

আরও খবর