কাপাসিয়ার টোকে রফিক ও চানু মেম্বারের বালু বাণিজ্য
আলোকিত প্রতিবেদক : তিনি আগে ছিলেন মাটি কাটার শ্রমিক। কষ্ট করে চলত সংসার। অবৈধ বালু ব্যবসায় পা দিয়ে পাল্টে গেছে জীবন।
আলোচিত এই ব্যক্তি হলেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার টোকনগর এলাকার রফিকুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বালু ব্যবসা করছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, টোকের বানার নদী সেতুর অল্প পশ্চিমে রফিকের বালুর গদি। নদীর পাড়ে হওয়ায় স্থানটি নিরিবিলি। প্রতিদিন লরিযোগে শত শত ঘনফুট বালু সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি অন্য স্থান থেকে বালু কিনে ট্রলারে করে এনে বিক্রি করছেন। তবে ক্রয়কৃত বালুর সাথে রাতের আঁধারে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে মেশানো হয়।
অবশ্য রফিকুল ইসলাম আলোকিত নিউজের কাছে দাবি করেন, তিনি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন না। অনেক দিন আগে তুলতেন।
গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আলোকিত নিউজ ডটকমে রফিক ও তার ভাই শফিকের বালুদস্যুতা নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
তাতে বলগেট দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীর পাড় ভাঙনের দৃশ্য ওঠে আসে।
আরও পড়ুন : কাপাসিয়ার টোকে বালুদস্যু রফিকের দাপট!
ওই দিন টোক পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই মাসুদ রানা পাইপসহ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করলেও রহস্যজনক কারণে মামলা হয়নি।
এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমত আরা অভিযান পরিচালনা করলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।
একাধিক এলাকাবাসী জানান, রফিক ১৫-১৬ বছর আগে মাটি কাটা শ্রমিকের কাজ করতেন। বৈধ-অবৈধ বালুর ব্যবসায় তিনি আজ জিরো থেকে হিরো বনে গেছেন।
বর্তমানে তার দুটি লরি ও একটি বালুবাহী ট্রলার রয়েছে। টোক কাঁচা বাজারে কিনেছেন ৩০ লাখ টাকা মূল্যের আধা বিঘা জমি।
জানতে চাইলে রফিক বলেন, কী সম্পদ করছি, কী সম্পদ করছি। যে কইছে, হেরে জিগান।
অপরদিকে টোক ফেরিঘাটের পাশে আবদুস সালাম ওরফে চানু মেম্বারের বড় বালুর গদি। তিনি ১০-১২ বছর ধরে বালুর ব্যবসা করছেন।
স্থানীয়রা জানান, চানু মেম্বার বছর তিনেক আগে নদী থেকে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করেন। পরে তা প্রিটি অটো ব্রিকস কারখানায় বিক্রি করা হয়।
তার তিন তলা ফাউন্ডেশনের দুটি বাড়ি রয়েছে। টোক নয়ন বাজারে সরকারি জমিতে দ্বিতীয় বাড়ির নিচ তলার নির্মাণ কাজ কিছুদিন আগে সম্পন্ন হয়েছে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে বাড়িটির কাজ শুরু হলে সাবেক এসিল্যান্ড নীলিমা রায়হানা গিয়ে স্থাপনা ভেঙে দেন। পরে পুনরায় কাজ সম্পন্ন হলেও রহস্যজনক কারণে কেউ বাধা দেননি।
একজন ব্যবসায়ী জানান, চানু মেম্বার এখন অন্য স্থান থেকে বালু কিনে এনে ব্যবসা করছেন। তবে তার গদিতে অবৈধ বালুও রয়েছে।
এ ব্যাপারে চানু মেম্বার আলোকিত নিউজকে বলেন, তিনি বালু উত্তোলন করেন না। রফিক নিজস্ব ড্রেজার দিয়ে নিয়মিত বালু তুলেন।
সরকারি জমি দখল প্রসঙ্গে বলেন, তিনি সিএস ও এসএ সূত্রে ওই জমি কিনেছেন। আরএস রেকর্ডে তা পেরিফেরি হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।
সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, অভিযুক্তদের আয়-ব্যয়, অর্জিত সম্পদ ও ইনকাম ট্যাক্সের তথ্য বিশ্লেষণ করলে তারা অবৈধ বা কালো টাকার মালিক কি না, তা পরিষ্কার হবে। অপরাধ দমনে প্রশাসনের তৎপর হওয়া উচিত।