গাজীপুরে ‘দুদকের আসামি’ নায়েব আবদুল হাই বহাল তবিয়তে

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে দুর্নীতিতে বহুল আলোচিত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবদুল হাই শিকদার বহাল তবিয়তে আছেন।

বর্তমান কর্মস্থল সদর উপজেলার বাড়ীয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসেও জমির খাজনা-খারিজে বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আবদুল হাই শিকদার দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত। কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আশীর্বাদে কামিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। গড়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ।

তিনি ২০১১ সালে পৌর ভূমি অফিসে দায়িত্ব পালনকালে নগরীর ধীরাশ্রম মৌজার আরএস ১০৩৭ নং দাগের ২৬ শতাংশ সরকারি জমি মৃত সরাফত আলীর ছেলে হারুনের নামে খারিজ করে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক সামছুল আলম বাদী হয়ে আবদুল হাই শিকদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর ৮৪ (১০) ১১।

এরপর ২০১৪ সালে আদালতে চার্জশিট দাখিল হলে আবদুল হাই শিকদারসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাময়িক বরখাস্ত হন। তারা গ্রেফতার এড়িয়ে উচ্চ আদালত থেকে জামিনও পান।

২০১৬ সালে রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত ও তাদেরকে পদে পুনর্বহালের আদেশ দেন।

পরে অভিযুক্তদের আর কেউ দমাতে পারেননি। ছয় মাস পরপর আদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে বীরদর্পে চলছে দৌরাত্ম্য।

এরই মধ্যে আবদুল হাই শিকদার ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা থেকে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছেন। সেই লোভনীয় পৌর ভূমি অফিসে আবারও পোস্টিং নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

আবদুল হাই শিকদারের পৈতৃক বাড়ি কাপাসিয়ার চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও গ্রামে। তিনি বসবাস করেন জেলা শহরের উত্তর বিলাশপুর এলাকার পাঁচ তলা বাড়িতে।

ভূমি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আবদুল হাই শিকদার যেখানেই যান, সেখানেই দালাল লালন ও নানা কৌশলে বাণিজ্য করেন। জেলা প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় জনসাধারণের ভোগান্তি বাড়ছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবদুল হাই শিকদার আলোকিত নিউজকে বলেন, শুধু আমি না, সবাই হাইকোর্টের অর্ডার এনে চাকরিতে বহাল আছি। ছয় মাস পরপর হাজিরার তারিখ পড়ে।

তিনি বলেন, তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো ২০০২ সালে তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছিল। ২০১৬ সালে দাখিলকৃত চার্জশিটে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আবদুল হাই শিকদার বলেন, দুদক মামলায় চারটি বাড়ি ও মার্কেট দেখিয়েছিল। এসব আমার নামে না, আমার স্ত্রীর নামে।

তিনি আরও বলেন, তার স্ত্রী শিক্ষকতার টাকায় কিছু সম্পদ করেছেন। আর বাকিটা তার শ্বশুর দিয়েছেন।

একজন আইনজীবী বলেন, ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় যাবজ্জীবন বা ১০ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা এবং ৫ (২) ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধান রয়েছে। ঝুলে থাকা মামলা সচলে দুদকের তৎপরতা বাড়ানো উচিত।

আরও খবর