ইসলামে সময়ের গুরুত্ব এবং সুরাতুল আসর
মাহমুদ : সময় আল্লাহর দান। পৃথিবীতে এর মূল্যায়ন যে যত বেশি করেছে, ততই মূল্যায়ন পেয়েছে। অবমূল্যায়ন যতই করেছে, ততই অবমূল্যায়ন পেয়েছে। পেয়েছে লাঞ্ছনা, বঞ্চনা।
প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ক্ষণ নষ্ট করা মানে নিজেকে ক্ষতির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া। যেমন কেউ একজন ব্যবসার উদ্দেশে মার্কেটে দোকান নিল, পুঁজিও ব্যয় করল, কিন্তু সে সেখানে সময় দেয়নি বা দিতে পারেনি। তাহলে একদিন সে ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারে দাঁড়াবে।
এদিকে যারা নিয়মিত সময় দিচ্ছে, চেষ্টা করছে-তারাই লাভবানদের সারিতে দাঁড়াবে। এই লাভ-ক্ষতির হিসাব বোঝাতেই আল্লাহ তায়ালা নাজিল করেছেন ‘সুরাতুল আসর’। যে সুরাটি কয়েকটি বাক্যে, কিন্তু অর্থ ব্যাপক।
এই সুরাটিতে আলোচনা করা হয়েছে চারটি গুণের কথা। এই গুণগুলো যার মধ্যে থাকবে, সে কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
১. ইমান আনা।
২. সৎ কাজ করা।
৩. হক কাজের উপদেশ দেওয়া।
৪. ধৈর্যের উপদেশ দেওয়া।
ইমান আনার উদ্দেশ্য হল তিনটি-
এক. আল্লাহর প্রতি ইমান আনা। তার যাবতীয় পবিত্র সত্ত্বার প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা। গাইরুল্লাহ থেকে কিছু হয় না, যা হয় আল্লাহ থেকেই হয়।
দুই. রাসুলের প্রতি ইমান আনা। রাসুল (সা.) শেষ নবী, এটা বিশ্বাস করা। অন্যান্য রাসুল ও ফেরেশতাদের প্রতি ইমান আনাও রাসুলের প্রতি ইমান আনার অন্তর্ভুক্ত।
তিন. আখিরাতের প্রতি ইমান আনা। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে, এই জীবনই শেষ নয়, আরেকটা জীবন আছে। সে জীবনটাই আসল।
সৎ কাজ করা কথাটি কোরআনে ইমানের পরপরই এসেছে। ইমান ও সৎ কাজ একটি অপরটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কেউ সৎ কাজ করল ইমানবিহীন, সেটা পুণ্যের শূন্যতায়ই থেকে যাবে। আবার সৎ কাজহীন ইমান, সেটা নামমাত্র দাবি ছাড়া কিছুই নয়।
হক শব্দের দুটি অর্থ-
১. সঠিক, নির্ভুল, পূর্ণ সত্য ও ইনসাফ। তা ইমান ও আকিদার সঙ্গে হোক কিংবা বৈষয়িক কাজ সম্পর্কিত হোক।
২. অধিকার। সেটা আল্লাহর হক, বান্দার হক, কিংবা নিজের হক।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, উপদেশ দিতে থাকো। অবশ্যই উপদেশ ইমানদারদের উপকৃত করবে। এখানে উপদেশের মধ্যে অন্যায় কাজে বাধা দেওয়ারও অর্থ রয়েছে।
অসৎ কাজে বাধা দিলে অসংখ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তখন ধৈর্য ধারণ করতে হবে। ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে।