গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ অফিসের পাশে বন দখলে শরাফতের দাপট
আলোকিত প্রতিবেদক : পরপর দুবার উচ্ছেদ অভিযান চলার পরও বনভূমি ফের দখল হল। প্রতিরোধ না করে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলেন রক্ষকরা।
ঢাকা বন বিভাগের অধীন গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ অফিসের পাশে মূল্যবান বনভূমি নিয়ে এভাবে চলছে ইঁদুর-বিড়ালের খেলা।
সরেজমিনে জানা যায়, রেঞ্জ অফিসের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে নোয়াগাঁও মৌজার সিএস ১৭৭ নং দাগের বনভূমি দখল করে টিনশেড বাড়ি, আরসিসি খুঁটি পুঁতে টিনের বাউন্ডারি, কাঠের দোকান ও বিভিন্ন গাছ রোপণ করেন ব্যবসায়ী শরাফত আলী। দীর্ঘদিন ধরে এসব চললেও নীরব ভূমিকা পালন করে রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিট অফিস।
সেখানকার দখল বাণিজ্য নিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আলোকিত নিউজ ডটকমে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে চলে তোলপাড়। পরদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
কয়েক দিন পর আবার বনভূমি দখলের তৎপরতা শুরু করেন শরাফত আলী। বিট অফিস তাকে প্রকাশ্যে সহযোগিতা করে।
বিষয়টির ওপর গত ৩ এপ্রিল আলোকিত নিউজে আরেকটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরদিন আবারও অভিযানে নামে বিট অফিস।
এ সময় শরাফত আলীর টিনের বাউন্ডারির কিছু অংশ ও কাঠের দোকান অপসারণ করা হয়। পরে দুই অভিযানে উদ্ধারকৃত আধা বিঘা বনভূমিতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২০০ চারা রোপণ করা হয়।
এবারও অভিযানের কয়েক দিন পর বনভূমি দখলের তৎপরতা শুরু করেন শরাফত আলী। ভেতরে বনভূমি রেখে পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশের টিনের বাউন্ডারি বহাল করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, বিট অফিস শরাফত আলীকে বাড়িতে চলাচলের জন্য বনের ওপর দিয়ে ১০ ফুট প্রস্থের রাস্তা দিয়েছে। তার ভাড়া টিনেশড বাড়ির শুধু দক্ষিণ পাশের একটি ঘরের টিন খুলে রাখা হয়েছে। পাকা ভিটিসহ পুরো অংশ উচ্ছেদ করা হয়নি।
অপর দখলদার রিয়াজ উদ্দিনও উচ্ছেদকৃত অংশের পূর্ব পাশের কিছু অংশ টিনের বেড়া দিয়ে আবার দখল করেছেন। তাদের কর্মকাণ্ডে রোপণকৃত চারাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে শরাফত আলীর বাড়িমুখী রাস্তা সংলগ্ন বনভূমিতে স্যানিটারি ওয়ার্কশপ ছিল। প্রথম অভিযানে সেটা উচ্ছেদ করা হলেও ইতিমধ্যে সেখানে ‘বিল্লাল সিএনজি ওয়ার্কশপ’ নামে স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শরাফত আলীর প্রতি আগে থেকেই বন কর্মকর্তাদের বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। তাই কোন অভিযানেই দখল কাজে ব্যবহৃত তার টিন ও কাঠ জব্দ করা হয়নি। এমনকি জবর দখলের ঘটনায় কোন মামলার তথ্যও পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে রেঞ্জ অফিসের পাশের পুকুরের উত্তর-পশ্চিম কোণে বনভূমি দখল করে নতুন একটি টিনশেড দোকান করেন ডিশ ব্যবসায়ী আরিফ। গত অভিযানে কয়েকটি টিন অপসারণ করা হলেও কাজ আবার সম্পন্ন হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা এ কে এম ফেরদৌস আলোকিত নিউজের কাছে দাবি করেন, শরাফত আলী নতুন করে কিছু করেননি। আগে যেমন ছিল, এখন তেমনই আছে।
আরও পড়ুন : গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে অভিযান : কিছু বনভূমি উদ্ধার, কিছু বহাল!