শ্রীপুরে বনভূমি দখলে প্রীতি গ্রুপের তালুকদারি!
আলোকিত প্রতিবেদক : শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রীতি গ্রুপ মূল্যবান সরকারি জমি গ্রাস করছে।
আলোকিত নিউজ ডটকমের অনুসন্ধানে ওঠে আসছে নানা চিত্র।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বনভূমি দখল নিয়ে প্রথম পর্ব আজ।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ভেতর দিয়ে কিছুদূর গেলে পৌর এলাকা মাধখলা।
খাস জমি অধ্যুষিত এলাকাটিতে রয়েছে চারটি কারখানা। তাই জমির দামও চড়া।
সেখানকার মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদের বাড়ির দক্ষিণ পাশে বন বিভাগের আগর বাগান। বাগান ঘেঁষে চলছে নির্মাণ কাজ।
এলাকায় স্থানটি তালুকদারের ভিটা নামে পরিচিত। জমির পরিমাণ প্রায় ১০ বিঘা।
জমিতে প্রবেশের সাধারণ রাস্তাটিও আগর বাগানের মধ্য দিয়ে। ডিমারকেশনের কোন খুঁটি পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি চারদিক দিয়ে আট ফুট উঁচু বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
স্থানীয়রা জানান, সিএস ও এসএ ১৮৯৩ নং দাগের ওই জমি বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত। বেশ কয়েক বছর আগে প্রীতি গ্রুপ চার ফুট উঁচু বাউন্ডারি ওয়াল করেছিল।
পরে ধীরে ধীরে তা ধসে পড়ে। এবার ওয়ালটি নিজেদের অটো ব্রিকস কারখানার দামি ইট দিয়ে মজবুত করে নির্মাণ করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, বাউন্ডারির কাজ শুরু হয় গত মে মাসে। শ্রীপুর রেঞ্জের সিংড়াতলী বিট অফিস কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সহযোগিতা করে।
এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রীতি গ্রুপ ওয়াল ধসে যাওয়ায় রিপেয়ারিং করেছে।
ডিমারকেশন আছে কি না, জানতে চাইলে বলেন, ডিমারকেশন ছিল অতীতে। খুঁটি আমিও দেখিনি।
ডিমারকেশনের কপি চাইলে তিনি বলেন, ফাইল আছে আমার এখানে। কিন্তু কপিটা অফিসে নেই।
এদিকে ওই ভিটায় ভোগদখল মূলে দেড় একর করে জমি বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন ফুলেছা বানু ও মৃত সিরাজ উদ্দিন। পরে প্রীতি গ্রুপ তাদের কাছ থেকে পুরো জমি কিনে নেয়।
অথচ বন্দোবস্তকৃত জমি আইনত বিক্রয় বা হস্তান্তর নিষিদ্ধ। ডিমারকেশন না থাকায় ১ নং ও ২ নং খতিয়ানের জমিও আলাদা হয়নি।
প্রীতি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী তালুকদার। সেখান থেকে পূর্ব দিকে তার নামে আরেকটি ভিটা আছে।
ভিটাটিতে জমির পরিমাণ আনুমানিক ২০ বিঘা। যার প্রায় অর্ধেক গেজেটভুক্ত বনভূমি।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় কাঁটাতারের বাউন্ডারি ও ভেতরের পাকা স্থাপনা ভেঙে ওই জমি উদ্ধার করা হয়েছিল।
এরপর সর্বশেষ ২০১৭-১৮ সালের উডলট বাগানসহ কয়েকবার চারা রোপণ করে বিট অফিস। কিন্তু প্রতিবারই চারাগুলো উঠিয়ে দখল বহাল রাখা হয়।
এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা বলেন, প্রীতি গ্রুপের সাথে মামলা চলছে। আমরা রায় পেয়েছি। ওরা আপিল করেছে।
চারা উঠানোর সত্যতা স্বীকার করে মনিরুল ইসলাম বলেন, এবার আবারও রোপণ করব।
বিষয়টি নিয়ে প্রীতি গ্রুপের গুলশান অফিসে যোগাযোগ করলে ম্যানেজার ইমদাদুল করিম মোবাইলে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।