গাজীপুর বিআরটিএ অফিসে ঘুষ ও দালালের ছড়াছড়ি
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুর বিআরটিএ অফিসে ঘুষ ছাড়া কোন সেবা মেলে না। দালালদের দৌরাত্ম্যে সেবাপ্রার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উত্তর পাশে দ্বিতীয় তলায় বিআরটিএ অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন রুম ও সামনের খোলা ছাদে দালালদের ভিড়। কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে তাদের শরণাপন্ন হতে হয়। চুক্তি ছাড়া কোন কাজ হয় না।
এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বেশির ভাগ সেবাপ্রার্থী নিয়ম-কানুন জানেন না। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের সাথে ব্যস্ততা দেখান। রানার কার্ডের পর দুই হাজার টাকা না দিলে পাস কার্ড দেওয়া হয় না। আর এই টাকা দালালদের মাধ্যমেই বেশি আদায় করা হয়। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও বন্ধ রয়েছে।
যেভাবে বাণিজ্য : আবেদনকারী ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পর রানার কার্ড দেওয়া হয়। এ সময় কম্পিউটার অপারেটর ১০০ টাকা করে নেন। পরে লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে বোর্ডের খরচের কথা বলে নেওয়া হয় দুই হাজার টাকা। ফিঙ্গার প্রিন্টের আগে ভলিউম করতে লাগে ২০০-৫০০ টাকা। পুলিশ ভেরিফিকেশনের স্মারকের জন্য অফিস সহকারী সুজন নেন ১০০-২০০ টাকা।
এ ছাড়া টাইগার প্রজেক্টের আলমগীরকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য ২০০-৩০০ টাকা ও আহাদকে গাড়ির স্মার্ট কার্ডের জন্য দিতে হয় ১০০-২০০ টাকা। লাইসেন্স ডেলিভারির সময়ও নেওয়া হয় ১০০ টাকা। কিছু বললে দুব্যবহার করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহে একদিন পরীক্ষার বোর্ড বসে। প্রতি বোর্ডে প্রায় ১৫০ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। সে হিসাবে সপ্তাহে তাদের কাছ থেকে বোর্ড বাবদ আদায় করা হয় প্রায় তিন লাখ টাকা। যা মাসে দাঁড়ায় প্রায় ১২ লাখ টাকা।
দালাল সমাচার : গাজীপুর বিআরটিএ অফিসের সেবা দীর্ঘদিন ধরে দালালমুখী। এখানে দালালি করে কেউ কেউ বাড়ি-গাড়ির মালিক বনে গেছেন। এর মধ্যে শাহীন মোল্লা বেশ আলোচিত। তার অধীনে কাজ করেন ১০-১২ জন। আরেক দালাল জাকির হোসেন অফিসে বসেই কাজ করেন। তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত একবার এক মাসের কারাদন্ড দিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে সহকারী পরিচালক এম এ আশরাফ সিদ্দিকীর সাথে কথা বলতে অফিসে দুদিন গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।