বন্যপ্রাণী বিভাগের গাজীপুরে বদলি বাণিজ্য রমরমা
আলোকিত প্রতিবেদক : বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের গাজীপুর বনাঞ্চলে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
কতিপয় কর্মকর্তা সংঘবদ্ধভাবে বনভূমি দখল ও উজাড়ে সহযোগিতা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই বিভাগের গাজীপুরের দুটি রেঞ্জে নানা দুর্নীতি চলছে। কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি দখল করছে মূল্যবান বনভূমি।
এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে কিছু তৎপরতা চলে। পরে টাকার বিনিময়ে দোষীদের অনেককে ছাড় দেওয়া হয়।
বাণিজ্য ধরে রাখতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে সুবিধা দিতে লঙ্ঘন করা হচ্ছে বদলি নীতিমালা।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বদলি নীতিমালা-২০০৪ অনুযায়ী, রেঞ্জার, ডেপুটি রেঞ্জার, ফরেস্টার, বনপ্রহরী ও বোটম্যানরা এক বিভাগে সর্বাধিক তিন বছর এবং এক সার্কেলে সর্বাধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত থাকতে পারেন।
কিন্তু জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বিতর্কিত রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল হাসেম এক বিভাগে চার বছর এবং এক সার্কেলে আছেন ছয় বছর ধরে। তাকে ভাওয়াল রেঞ্জের চলতি দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আবুল হাসেম দাপটের সাথে আখের গোছাচ্ছেন। উত্তরায় ফ্ল্যাট ও শেরপুরে ফাউন্ডেশনের বাড়িসহ নামে-বেনামে গড়ছেন সম্পদ।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুই বছর অন্তর অন্তর বদলি করতে হবে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে বদলি করতে হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরেস্টার আবুল হাসেম চৌধুরীকে বনখরিয়া বিট থেকে তিন মাসের ব্যবধানে পার্ক বিটে বদলি করা হয়। ভবানীপুর বিটে থাকাকালীন সময়ে তার দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আলোকিত নিউজ। পরে বিভাগীয় মামলাও হয়।
একইভাবে ফরেস্টার রইস উদ্দিনকে পার্ক থেকে তিন মাসের ব্যবধানে বারইপাড়া বিটে, নাসির উদ্দিনকে বারইপাড়া থেকে এক বছরের ব্যবধানে ভবানীপুর বিটে ও আজাদুল কবিরকে ভাওয়াল রেঞ্জ সদর থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে বারইপাড়া বিটে বদলি করা হয়।
এ ছাড়া পার্ক বিটের বনপ্রহরী হুমায়ুন কবির, আমিনুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, সিদ্দিকুর রহমান ও বিকেবাড়ি বিটের মালি আবদুল মালেকসহ প্রায় ১০ জনকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সাময়িক দায়িত্ব পালনের নামে বিভিন্ন বিটে বদলি করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এসব বদলির ক্ষেত্রে আর্থিক বিষয় প্রাধান্য পাচ্ছে। এ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
একজন ফরেস্টার বলেন, অপরাধ করলে বদলিসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু অসৎ উদ্দেশে অকালীন বদলি কাম্য নয়।
জানতে চাইলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহির উদ্দিন আকন আলোকিত নিউজকে বলেন, বদলি নীতিমালা বাইবেল নয়। এতে অসুবিধা নেই।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গাজীপুরের এসপি আছে পাঁচ বছর ধরে। আর ডিসি দুই বছরের মাথায় পোস্টিং হয়ে এক বছরের মাথায় চলে যায়।