গাজীপুরের হোতাপাড়ায় বনভূমি দখল, খলিল গ্রুপের বাউন্ডারি ওয়াল!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের হোতাপাড়ায় জবর দখলকৃত বনভূমিতে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছে খলিল গ্রুপ।

ঢাকা বন বিভাগের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের মনিপুর বিট এলাকায় প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

সরেজমিনে জানা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন পশ্চিম পাশে খলিল গ্রুপের তিনটি বহুতল ভবন। প্রথম ও তৃতীয় ভবন ভাড়া নিয়েছে পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান ইএসবিএল। আর মাঝেরটি ভাড়া নিয়েছে পলমল গ্রুপ।

গত সপ্তাহে ইএসবিএলের দ্বিতীয় কারখানার দক্ষিণ পাশে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়। যার উচ্চতা ১০ ফুট।

এই ওয়ালের ভেতরেই রয়েছে বোকরান মনিপুর মৌজার সিএস ৫৯৮ ও আরএস ১৭২১ নং দাগের ৪০ শতাংশ বনভূমি। খলিল গ্রুপের মালিক খলিলুর রহমান চৌধুরী তা দীর্ঘদিন আগে দখল করেছেন।

দখলকৃত বনভূমি দিয়েই ইএসবিএলের চলাচলের পথ। এ ছাড়া রয়েছে ফুলের বাগান ও জেনারেটরের রুমের একাংশ।

স্থানীয়রা জানান, দখলকৃত বনভূমিতে আগে বিট অফিসের রোপণকৃত আকাশমনি বাগান ছিল। খলিল চৌধুরী শতাধিক গাছ কেটে তা দখল করেন।

ওই স্থানে বিঘাপ্রতি জমির বর্তমান বাজারমূল্য চার কোটি টাকা। সে হিসাবে দখলীয় জমির মূল্য দাঁড়ায় চার কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, নতুন বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের সময় বিট অফিস প্রথমে নীরব ছিল। ঘটনাটি কিছু জানাজানি হলে গত ২৬ অক্টোবর সকালে তারা ঘটনাস্থলে যান।

নামমাত্র ভাঙার পর পুনরায় কাজ

পরে খলিল গ্রুপের কেয়ারটেকার আবদুল মতিন শ্রমিক দিয়ে কিছু অংশের ইট খুলে রাখেন। একই দিন বিকেলে তার উপস্থিতিতেই আবার নির্মাণ কাজ চলতে দেখা যায়।

দ্রুত কাজ শেষ করে ওয়ালের প্লাস্টারও সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনা ঢাকতে ওয়ালের বাইরে দিয়ে টিনের বেড়া দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে ইএসবিএলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ আলোকিত নিউজকে বলেন, আমরা শুধু ভবন ভাড়া নিয়েছি। কনস্ট্রাকশনের বিষয় কেয়ারটেকার মতিন দেখেন।

জানতে চাইলে আবদুল মতিন আলোকিত নিউজকে বলেন, ভেতরে বন নেই, বনভূমি আছে। এগুলো নিয়ে নিউজ করলে কোন কিছু হবে না। পরে দেখা কইরেন।

কী করছে বিট অফিস : গত আগস্টে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মনিপুর বিট কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল মারা যান। এরপর আর কারও পদায়ন হয়নি।

রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বিটটির অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। এই সুযোগে একাধিক কর্মচারী দালালদের মাধ্যমে দখল বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন।

খলিল গ্রুপের বাউন্ডারি ওয়াল প্রসঙ্গে বনপ্রহরী কামাল হোসেন আলোকিত নিউজের কাছে দাবি করেন, তারা ওয়াল ভেঙে দিয়েছেন। এখন ভাঙা অবস্থাতেই আছে।

ভাঙা নিয়ে ভাঁওতাবাজি

রেঞ্জ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনিও একই দাবি করে আলোকিত নিউজকে বলেন, ওয়াল তিন-চার দিন আগে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

আরও খবর