গাজীপুরের বাউপাড়া বিটে দখল বাণিজ্য রমরমা
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাউপাড়া বিট এলাকায় অবাধে দখল করা হচ্ছে বনভূমি।
গত কয়েক মাস ধরে এসব চললেও স্থানীয় বন কর্মকর্তারা নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, মাস্টারবাড়ির দক্ষিণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে ভাওরাইদ গ্রাম। এখানকার বন বিভাগের পুকুরটি আমিনুল হাজির পুকুর নামে পরিচিত। পুকুরের তিন পাশে বনের জমি।
সম্প্রতি পুকুরের পশ্চিম পাড়ে বনের জমিতে বড় পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী।
জানতে চাইলে তিনি আলোকিত নিউজকে বলেন, এখানে তার দখলীয় জমি ১৩ শতাংশ। এর মধ্যে ছয় শতাংশ জোত। একজন নেতা দিয়ে বিট অফিসে কথা বলিয়েছেন।
পুকুরের উত্তরে বনের জমিতে তিন রুমের বাড়ি করছেন ফিরোজ মিয়া। তার ছেলে রানা বলেন, বিট অফিসে কিছু খরচ দিয়ে কাজ করছি।
পুকুরের দক্ষিণে চার রুমের বাড়ি করেছেন ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বাদল। এর মধ্যে দুটি রুম বনের জমিতে পড়েছে।
বাদলের বাবা আমির হোসেন জানান, বিট অফিস তাদের কাছ থেকে ৬৮ হাজার টাকা নিয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ হাজার টাকা রুম বাবদ। আর পাঁচ হাজার টাকা লাকড়ি রাখার ছাপড়া বাবদ।
তিনি আরও জানান, দুজন বনপ্রহরী টাকা নিয়েছেন। তাকে একবার ধরে অফিসেও নেওয়া হয়েছিল। লেনদেনে মধ্যস্থতা করেন মাস্টারবাড়ি বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী সেকান্দার মন্ডল।
এদিকে বাংলাবাজারের দক্ষিণে ইপিলিয়ন স্টাইল কারখানার পাশে পাঁচ তলা বাড়ি করছেন চাল ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম। বনের জমি দখলের অভিযোগে বিট অফিস একবার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। ডিমারগেশন ছাড়াই কয়েক দিন আগে কাজ আবারও শুরু হয়েছে।
জাঙ্গালিয়া পাড়া মসজিদের পাশে বনের জমিতে চারটি দোকান করেছেন স্থানীয় মাসুদ। বিট অফিস তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে বলে প্রচার রয়েছে।
গজারিয়া পাড়ার লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাশে জমি কিনেছেন জনৈক ফখরুল ইসলাম। তিনি বাউন্ডারি ওয়াল করেছেন বনের জমিতে। এ থেকে বিট অফিস ৯০ হাজার টাকা নিয়েছে বলে প্রচার রয়েছে।
ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, বনপ্রহরী নুরুল ইসলাম ও সিদ্দিকুর রহমান দখলদারদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। পরে তা ভাগ-বাটোয়ারা হয়। এর মধ্যে নুরুল ইসলাম ঢাকা বন বিভাগে ঘুরেফিরে আছেন প্রায় দেড় যুগ ধরে। তিনি মহানগরীর ভাওয়াল কলেজের পাশে ইটাহাটা গ্রামে জমি কিনে ফাউন্ডেশন দিয়ে বাড়িও করছেন।
এ ব্যাপারে নুরুল ইসলাম বলেন, শুধু আমরা দায়ী নই। ফরেস্টার ও রেঞ্জারকে জিজ্ঞাসা করেন।
বাউপাড়া বিট কর্মকর্তা খন্দকার আরিফুল ইসলাম দখলের কিছু কথা স্বীকার করে বলেন, এক সময় অফিসে আসেন। দেখি কী করা যায়।