দূষণ : গাজীপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে অবৈধ কনসেপ্ট রেডিমিক্সের বৃদ্ধাঙ্গুলি!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে কনসেপ্ট কংক্রিট লিমিটেড।

সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে ২০১৭ সালে অবৈধভাবে এই রেডিমিক্স কারখানা গড়ে ওঠে।

কারখানাটির বনভূমি দখল এবং পরিবেশ দূষণের ওপর গত ২৪ মে আলোকিত নিউজ ডটকমে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা ফারজানা ৩০ মে অভিযান পরিচালনা করেন।

আদালত তথ্যের সত্যতা পেয়ে কারখানার ম্যানেজার সবুজ হোসেনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং যথাযথ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেন।

সরেজমিনে জানা যায়, ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে যাওয়ার পর ওই দিন থেকেই কনসেপ্টের উৎপাদন ফের শুরু হয়। যা প্রায় চার মাস ধরে অব্যাহত রয়েছে।

মালিক সাখাওয়াত হোসেন রোহান ও মাসুদুর রশিদ কারখানার উৎপাদনও বাড়িয়েছেন। পরিবেশ ও শব্দ দূষণে ভোগান্তি পোহাচ্ছে দুই শতাধিক পরিবার। পাউডার-জাতীয় ডাস্ট উড়ে ফলজ গাছের ফলন কমে যাচ্ছে।

দূষণে বিপর্যস্ত পরিবেশ

ভুক্তভোগীরা ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। কারখানার কঠিন ও তরল বর্জ্যে বনের মাটিও ব্যাপক দূষিত হচ্ছে।

বন বিভাগ বলছে, কনসেপ্ট সাড়ে পাঁচ বিঘা বনভূমি দখল করেছিল। তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে ১৫ দিনের মধ্যে জমি ছেড়ে দেওয়ার লিখিত অঙ্গীকার করেও ছাড়েনি।

পরে গত ৩১ আগস্ট মালামাল ও গাড়ি রাখার কাজে ব্যবহৃত আড়াই বিঘা বনভূমি উদ্ধার করে বনায়ন করা হয়েছে। বাকি তিন বিঘা না ছাড়লে ডিমারকেশন পাওয়ার সুযোগ নেই। আর ডিমারকেশন ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও মিলবে না।

জানতে চাইলে কনসেপ্টের ম্যানেজার সবুজ হোসেন উৎপাদন চলার কথা স্বীকার করে আলোকিত নিউজকে বলেন, তারা বন্ধের নির্দেশের লিখিত কোন কিছু পাননি। মৌখিকভাবেও বন্ধ রাখতে বলা হয়নি।

এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কারখানাটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য উৎপাদন ও সরবরাহ সংক্রান্ত পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ৬ (গ) ধারায় সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন।

একই ধারায় পরবর্তী প্রতিটি অপরাধের ক্ষেত্রে দুই বছর থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

এ ছাড়া কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে কোম্পানিকে আলাদাভাবে একই কার্যধারায় দোষী সাব্যস্ত করে অর্থদণ্ড ও বর্জ্য সৃষ্টিকারী যন্ত্রপাতি জব্দের বিধান রয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযানে থাকা পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার আশরাফ উদ্দিন আলোকিত নিউজকে বলেন, আমরা ক্ষতিপূরণ ধার্য ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এনফোর্সমেন্টে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। এনফোর্সমেন্ট কী ব্যবস্থা নিয়েছে, জানা নেই।

আরও পড়ুন : গাজীপুরের কনসেপ্ট রেডিমিক্সে অভিযান, ২ লাখ টাকা জরিমানা

আরও খবর