গাজীপুরে নর্দান টাইলসের শব্দ দূষণে ৫ শতাধিক মানুষের ভোগান্তি

আলোকিত প্রতিবেদক : যখন মেশিনে বড় বড় পাথর কাটা হয়, তখন আশপাশের বাড়িঘরে কম্পন হয়। বিকট শব্দে ভয়ে ঘুমন্ত শিশুরা চিৎকার দিয়ে ওঠে।

এভাবে দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে দূষণে ভুগছেন জনসাধারণ। কখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকার সাফারি পার্ক রোডের পাশে কারখানাটি অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। নাম নর্দান মার্বেল এন্ড গ্রানাইট ইন্ডাস্ট্রিজ।

সরেজমিনে জানা যায়, মার্বেল টাইলস তৈরির এই কারখানা ২০০০ সালের দিকে স্থাপন করা হয়। পরে ২০১৪ সালে ঢাকার সরদার মোহাম্মদ আলী এটা কিনে সম্প্রসারণ করেন ও উৎপাদন বাড়ান।

কারখানাটির চারপাশে শতাধিক বাড়িতে পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। পাঁচটি মেশিনে দিন-রাত চলে উৎপাদন।

২২ থেকে ৩৫ টন ওজনের একেকটি পাথর কাটার সময় বিকট শব্দের সৃষ্টি হয়। তখন কারখানা সংলগ্ন বাড়িঘরে কম্পন হয়। ঘুমন্ত শিশুরা ভয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠে।

বসতবাড়ি ঘেঁষে টাইলসের স্তূপ

এ ছাড়া কারখানার দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম অংশ উন্মুক্ত। ছোট ছোট মেশিনে টাইলস কাটার সময় ধুলাজাতীয় বর্জ্য পরিবেশে নির্গত হয়।

কারখানাটির পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র নেই। তারপরও জনবহুল এলাকায় অবাধে চলছে। জেলা পরিবেশ কার্যালয়ের তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানান, উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী এই কারখানা যখন স্থাপন করা হয়, তখন সেখানে ৪০-৫০টি বাড়ি ছিল। পরে দিন দিন বসতি বাড়ে। অসহনীয় শব্দের বিষয়ে মালিককে বারবার বললেও তিনি কর্ণপাত করেননি।

তারা আরও জানান, শব্দ দূষণে শিশুসহ বাসিন্দাদের শ্রবণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। বিরূপ প্রভাবে কাঁঠালসহ ফলমূলের উৎপাদনও কমেছে। কারখানাটিতে এক ইউপি মেম্বার ব্যবসা করেন। তার দাপটে লোকজন অসহায় হয়ে পড়েছেন।

এ ব্যাপারে কারখানায় গেলে ম্যানেজার এস কে কৌশিক আহমেদ আলোকিত নিউজকে বলেন, টাইলস তৈরির পাথরগুলো তুরস্ক ও ভারত থেকে আমদানি করা হয়। দূষণ বা পরিবেশের ছাড়পত্রের বিষয়ে হেড অফিস বলতে পারবে।

পরে ঢাকা অফিসের কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিলের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি আলোকিত নিউজকে বলেন, পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সরকার শব্দ কমানোর শর্ত দিলে তা করা হবে।

পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, আবাসিক এলাকায় এ ধরনের কারখানা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। উচ্চ শব্দে মানুষের মস্তিষ্ক ও কানের ক্ষতির পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

আরও খবর