কাপাসিয়ায় ৯০ বিঘা কৃষি জমিতে জামানের অবৈধ ইটভাটা!
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ৯০ বিঘা কৃষি জমি বিনষ্ট করে এক ব্যক্তির তিনটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স ছাড়াই এক যুগ ধরে অবাধে চলছে তার দৌরাত্ম্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তরগাঁও দক্ষিণপাড়া এলাকায় ইটভাটা তিনটি অবস্থিত। দুটি এক সাথে। অপরটি কাছাকাছি। জমির পরিমাণ প্রায় ৯০ বিঘা।
ভাটার নাম আরবিএম। মালিক তরগাঁওয়ের জামান বেপারী। তিনি জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম বেপারীর ছোট ভাই।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন-২০১৩ অনুযায়ী, বছরে একাধিকবার কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত জমিতে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, জামান বেপারী জমি ভাড়া নিয়ে ইটভাটাগুলো করেছেন। সেখানকার জমিতে বছরে অন্তত দুইবার ফসল ফলে। ভাটার কারণে চাষে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
জামান বেপারী ইটভাটা স্থাপনের সময় কৃষকদের বিঘাপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে দিতেন। স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি হলেও এখন টাকা না দিয়ে ঘোরানো হচ্ছে।
এ ছাড়া কয়েকজনের জমি জবর দখলও করা হয়েছে। মাটি ও বালু ফেলে কারও জমি ভরাট করা হচ্ছে। আবার কারও জমি থেকে গভীর করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে।
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এম এ গণি আলোকিত নিউজকে বলেন, জামান কারও কথা মানছেন না। আমাদের সোয়া এক বিঘা কৃষি জমি বিনষ্ট হয়েছে। ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচলে রাস্তাও দখল করেছেন।
আবুল হোসেন (৮৩) বলেন, ভাটায় আমার জমি দেড় বিঘা। জামান সাড়ে চার গন্ডার ভাড়া দেননি। বছর খানেক আগে তাকে জুতাপেটাও করেছিলাম।
হাবিবুল্লাহ (৫৫) বলেন, ভাটার উত্তর পাশে তার আট গন্ডা জমি বালু ফেলে দখল করা হয়েছে। এর আগে এক গন্ডা জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে নেওয়া হয়।
আবদুল মান্নান (৭০) বলেন, জামান তার তিন গন্ডা জমি দখল করেছেন। ছেলে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তাকে সন্ত্রাসী বলে হুমকি দেওয়া হয়।
শামসুল আলম মোল্লা (৫৫) বলেন, ভাটায় আমার পৌনে দুই বিঘা জমি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। টাকা না দিয়ে নতুন করে বালু ফেলে আরও ভরাট করা হচ্ছে।
হারুন (৫০) বলেন, ভাটায় তিনি দেড় বিঘা জমি ভাড়া দিয়েছেন। এরই মধ্যে পাঁচ গন্ডা জমির মাটি জোর করে কেটে নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ইটভাটার মালিক জামান বেপারী আলোকিত নিউজের কাছে স্বীকার করেন, তার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স নেই।
কৃষকদের জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, মাটি শেষ হয়ে গেলে এক বছর পর নিজেই ওঠে যাব।
বিষয়টি সদ্য বদলি হওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাকছুদুল ইসলামকে জানালে তিনি দেখবেন বললেও কোন কাজ হয়নি।