গাজীপুরে ‘বনের কোর জোনে’ অবৈধভাবে গড়ে উঠল করিম রেডিমিক্স!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য এলাকায় এবার গড়ে উঠেছে করিম এসফল্ট এন্ড রেডিমিক্স।

জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাউপাড়া বিটের বাউপাড়া এলাকায় গত চার মাস ধরে কারখানাটি স্থাপনের কার্যক্রম চলছে।

সরেজমিনে জানা যায়, নগরীর মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে পশ্চিম দিকে বাউপাড়া এলাকা। কাউলতিয়া রাস্তা সংলগ্ন মক্কা মসজিদের উত্তর পাশে ১০ বিঘা ফসলি জমি ও একটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। সম্প্রতি স্থাপন করা হয়েছে একটি প্লান্ট। চলছে অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ।

বন ঘেঁষে প্লান্ট

কারখানা ঘেঁষে উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে সংরক্ষিত বনভূমি। অন্তত ১৫ বিঘাজুড়ে সৃজন করা হয়েছে আকাশমনি বাগান।

শিল্প প্রতিষ্ঠান করিম গ্রুপ তাদের কংক্রিট রেডিমিক্স কারখানা গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় বুলবুল আহমেদ গংয়ের কাছ থেকে ওই জমি ভাড়া নিয়েছে। কিন্তু বন বিভাগের সাথে যৌথ ডিমারকেশন করা হয়নি।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী, সরকার ঘোষিত অভয়ারণ্য এলাকা থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত কোর জোন। এই জোনে শিল্প কারখানা স্থাপন বা পরিচালনা নিষিদ্ধ। আইন লঙ্ঘন করলে জেল-জরিমানার নির্দেশনা রয়েছে।

অথচ জাতীয় উদ্যান থেকে কারখানাটির দূরত্ব এক কিলোমিটারেরও কম। তাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের অবস্থানগত ও জেলা প্রশাসনের শ্রেণি পরিবর্তন সংক্রান্ত ছাড়পত্রও নেই।

বন ঘেঁষে মাটি ও বালু ভরাট

এলাকাবাসী জানান, পাকা রাস্তা থেকে কারখানায় প্রবেশের ১৫০ ফুট রাস্তা সিটি করপোরেশন থেকে বনভূমির ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। কারখানার মালবাহী গাড়ির কারণে আকাশমনি বাগান ঝুঁকিতে পড়ছে।

তারা আরও জানান, কারখানাটির উৎপাদন শুরু হলে বন ও পরিবেশের বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আইন-কানুন না মেনে এসব কর্মকাণ্ড চললেও বন কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা নেননি।

জানতে চাইলে কারখানার ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম আলোকিত নিউজকে বলেন, বন বিভাগের সাথে ডিমারকেশন প্রক্রিয়াধীন আছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আইনের বাইরে কিছু করছি না। কে কী করল, এসব দেখার সময় নেই।

এ ব্যাপারে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার ঘোষ আলোকিত নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।

আরও পড়ুন : গাজীপুরে কোর জোনে অবৈধ মীর রেডিমিক্স, বন-পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি

বিশেষ দ্রষ্টব্য : আলোকিত নিউজে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে কিছু ধান্ধাবাজের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। এদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা সতর্ক থাকুন।

আরও খবর