গাজীপুরে সালেক টেক্সটাইল ও নেওয়াজ স্টিলের শব্দ দূষণ চরমে
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুর সদরের ভবানীপুর ও শিরিরচালায় দুটি কারখানার শব্দ দূষণে জনসাধারণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
ভবানীপুর বাজার হয়ে পশ্চিম দিকে জাকির মার্কেটের পাশে অবস্থিত কারখানাটির নাম সালেক টেক্সটাইল। এটি তিতাস নামে পরিচিত।
আর বাঘের বাজার হয়ে পূর্ব দিকে শিরিরচালা পূর্বপাড়ায় অবস্থিত কারখানাটির নাম নেওয়াজ স্টিল লিমিটেড।
সরেজমিনে দেখা যায়, সালেক টেক্সটাইলের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বয়লার ও বড় জেনারেটর রুম। রাত-দিন বিকট শব্দ। শব্দ প্রতিরোধী ব্যবস্থা ও বাউন্ডারি ওয়াল নেই।
কারখানাটির দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসবাস। টানা শব্দে তাদের ভোগান্তি এখন চরমে।
বিলাতুন নেছা (৫০) ও মনোয়ারা বেগম (৪৫) আলোকিত নিউজকে জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে শব্দ দূষণে ভুগছেন। কারখানার মালিক কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বয়লারের ধোঁয়া ছাড়ার সময় শব্দ বেশি হয়। শিশুরা ভয়ে ঘুম থেকে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আয়শা আক্তার জানায়, শব্দে তাদের পড়ায় সমস্যা হয়। নষ্ট হয় মনোযোগ।
সরকার পাড়ার রফিক সরকার জানান, তিনি কারখানার পাশে ১৮ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করতেন। দূষিত পানির প্রভাবে প্রায় পাঁচ বছর ধরে ফসল হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি।
ভবানীপুর বিট কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, কারখানার ভেতরে বনের নামে গেজেটভুক্ত জমি রয়েছে। মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কারখানায় গেলে এজিএম ইফতেখার হোসেন আলোকিত নিউজকে বলেন, আমাদের কারখানায় কোন দূষণ নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব ঢাকা অফিসে। আপনারা দেখার অথরিটি না।
অপরদিকে নেওয়াজ স্টিলের দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্ব পাশে কয়েকটি পরিবারের বসবাস। উৎপাদনের সময় বিকট শব্দ হয়। তাদেরও শব্দ প্রতিরোধী ব্যবস্থা নেই। কারখানার সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী জনসাধারণও এ দূষণের শিকার হন।
স্থানীয় দোকানদার কামরুল ইসলাম বলেন, বিকট শব্দে শ্রবণে সমস্যা হচ্ছে।
দোকানদার হামিদুল ইসলাম বলেন, শব্দে সমস্যা হয়। কী আর করব। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।
ইউপি মেম্বার আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, কারখানার দক্ষিণ পাশের বাউন্ডারি ওয়াল রেকর্ডের রাস্তার ওপর করা হয়েছে।
আবু সাইদ বলেন, বাউন্ডারি ওয়ালের সাথে কারখানার স্থাপনা যুক্ত করায় বৃষ্টির পানি সরাসরি রাস্তায় পড়ে। এতে চলাচলে ভোগান্তি হয়।
কারখানার ভেতরে গিয়ে কথা হয় ম্যানেজার রকিবুল ইসলাম সোহাগের সাথে। তিনি আলোকিত নিউজকে বলেন, শব্দে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দেখতে চাইলে ম্যানেজার বলেন, কাগজপত্র ঢাকা অফিসে। সেখান থেকে এনে আপনাদের ফোন করব।
পরে কোন সাড়া না পেয়ে ফোন করলে তিনি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের একজনকে দিয়ে ফোন করিয়ে নিউজ না করার অনুরোধ জানান।
(প্রতিবেদনে সহায়তা করেন নিজস্ব প্রতিবেদক সাইফুল ইসলাম ও প্রতিবেদক মেহেদী হাসান সবুজ)