মুক্তারুজ্জামান মুক্তির কবিতা ‘ঈদ আনন্দ নীল’

ঈদ আনন্দ নীল

-মুক্তারুজ্জামান খাঁন মুক্তি

নববধূ বলছে ফোনে, কিগো

কত দিন হল, আসবে না বাড়িতে?

ফোনের অপর প্রান্তে নিস্তব্ধ বাক্য

নীরবতা কাটিয়ে দুপ্রান্তে ঘন নিঃশ্বাস

আসব, তবে ঈদে ছুটি হবে না।

কেন?

তুমি জান, সবাই যখন ঈদের ছুটিতে যায়

পুলিশ তখন রাস্তায় যানজট নিরসন করে

ঈদের দিন যখন সবাই নামাজ পড়ে

পুলিশ তখন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে ঘিরে।

কী করে আসব ময়না, একটু সবুর কর

ঈদ শেষে আসব তোমার কাছে

অপর প্রান্ত হতে ময়না কথা কয় না

সংযোগ কেটে যায়।

কষ্টে বুক ধড়ফড় করে

কেউ বুঝে না কষ্টের কাহিনি।

চক্র গতিতে ডিউটি চলছে

দিনে ১৬ ঘণ্টার কম নয়।

লাখো মানুষ ছুটে চলছে

ঈদ করবে বাড়িতে প্রিয়জনের সাথে

পুলিশের নেই আনন্দের খেয়াল

কর্তব্যে ভুলে গেছে মনের কোলাহল।

হঠাৎ আবার ফোন বাজতে থাকে

খেয়াল নেই সেই দিকে

গাড়ির হাইড্রলিক হর্ন

মানুষের আনন্দ-চিৎকার

সব মিলে কর্তব্যের ভিড়ে বিভোর।

পাশের জন ফোনের শব্দ শুনে

বলছে, জনাব আপনার ফোন বাজে

ফোনটি ধরে বলছে, মা কেমন আছ?

অপর প্রান্ত হতে মা

খোকা আমার শরীর ভাল না

তোকে দেখতে ইচ্ছা করছে

কি আসবি না ঈদে?

সাবধানে ডিউটি করিস

পারলে আমাকে দেখে যাস।

আসব মা ঈদের পরে

তুমি দোয়া কর

ঈদ শেষে যেন খোকা আসে ফিরে।

মন যে কষ্টে ভেঙে যাচ্ছে

কর্তব্য আমাকে রেখেছে বেঁধে।

পাশে আরেক পুলিশের ফোন বাজে

বললাম, রুবেল ভাই ফোনটি ধর

সে ধরে বলে, মামনি, সোনা আমার।

অপর প্রান্তে ছোট্ট মেয়ে বলছে কেঁদে

বাবা তুমি কী আসবে না বাড়িতে

আমার নতুন জামা কিনতে হবে।

মেয়ের আকুতি শুনে নির্বাক বাবা

আসব মা ঈদের পরে

তোমার জন্য কিনে রেখেছি জামা।

কেটে যায় সংযোগ

পুলিশের ঈদ আনন্দ নীল বলে।

আরও খবর