কাপাসিয়ার ডুমদিয়া হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি, প্রতিবাদ-মামলা

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের কাপাসিয়ার ডুমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্মচারী নিয়োগের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম (৫০) টোক ইউনিয়নের সালুয়াটেকি গ্রামের মৃত মুসলিম উদ্দিনের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ডুমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে বিভাজন।

প্রধান শিক্ষক গত বছরের ৯ জুন পত্রিকায় নৈশপ্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি দেন। পরে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

নৈশপ্রহরী প্রার্থী আবদুল আলীম মীর জানান, তিনি বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবারের সদস্য। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর প্রধান শিক্ষক চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে দুই দফায় তিন লাখ টাকা নেন। চাকরি দিতে না পেরে এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।

বিষয়টি নিয়ে আলীম মীর গত ২৩ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ইউএনও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।

সমবায় কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ মৃধা গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তদন্তের দিন ধার্য করেও রহস্যজনক কারণে তদন্ত করেননি। পরে ভুক্তভোগী গাজীপুর আদালতে একটি প্রতারণার মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই।

এদিকে গত ৭ মে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে বিদ্যালয় মাঠে এক প্রতিবাদ সভা হয়। পরে ১২ মে সমবায় কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত করেন। তবে প্রতিবাদকারীরা এই তদন্তে সন্তুষ্ট নন বলে জানান।

অভিযোগকারীরা বলছেন, প্রধান শিক্ষকের সাথে তাল মিলিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিনও আয়া পদের প্রার্থী জাকিয়া সুলতানার বাবা ফজলুল করিমের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা নেন। জাকিয়া কিছুদিন চাকরিও করেন। পরে চাপে পড়ে টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

তদন্তের দিন নাসির মাস্টারকে বলতে শোনা যায়, তিনি চাকরি দেওয়ার জন্য টাকা নেননি, ধার নিয়েছেন। যদিও প্রার্থীর বাবা বলছেন ধার নয়, ঘুষ।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি আলোকিত নিউজকে বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্থানীয় রাজনীতি, দাতা-প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। ভুল-ত্রুটি থাকায় আলীম মীরের দরখাস্ত বাতিল করা হয়েছে।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম আলোকিত নিউজকে বলেন, সমবায় কর্মকর্তার সাথে সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাও তদন্তে গিয়েছেন। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে অভিযোগ করা হচ্ছে।

তবে পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ম্যানেজিং কমিটিতে যেহেতু রাজনৈতিক ব্যক্তি থাকেন, সেহেতু দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু দ্বন্দ্ব আর দুর্নীতি এক কথা নয়। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

আরও খবর