‘জয়দেবপুরের পথ ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’
আলোকিত প্রতিবেদক : ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন।
এই দিনের সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা উদিত হতে থাকে।
সে দিন সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন নিয়ামত, হুরমত ও মনু খলিফা। পরে আহত অবস্থায় মারা যান কানু মিয়া।
পাকিস্তানি হানাদারদের গুলিতে আহত হন অনেকে। আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
স্লোগান ওঠে ‘জয়দেবপুরের পথ ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
ঘটনার বিবরণ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পর বাঙালিদের দুর্বল করতে জয়দেবপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যদেরও নিরস্ত্র করার লক্ষ্যে অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় সদর দপ্তর।
কিন্তু মুক্তিকামী বাঙালি সৈন্যরা অস্ত্র জমা না দিয়ে ও স্থানীয় জনতা হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে অবরোধ সৃষ্টি করেন।
পরে পাক বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব সৈন্যদের সতর্ক অবস্থান ও সড়কে আন্দোলনকারীদের দেখে ঢাকায় রওনা হন।
তখন রেলক্রসিং এলাকা ও চান্দনা চৌরাস্তায় শুরু হয় মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির শত শত শ্রমিক ও জনতার প্রতিরোধ।
ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব সড়ক থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিলে জনতা তার কথায় কর্ণপাত করেননি।
এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সৈন্যদের ফাঁকা গুলির নির্দেশ দিলে তারা গুলি করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালান।
এ সময় জনতা রেশনবাহী একটি গাড়িতে থাকা সৈন্যদের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে পাল্টা গুলি চালালে শুরু হয় লড়াই।
এক পর্যায়ে সৈন্যদের একটি গুলি নিয়ামতের বুকে এসে লাগে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।