গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্কে লুটপাট : মাহমুদ মুক্ত বিহঙ্গ!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের পার্ক বিটে মাহমুদার রহমানের দৌরাত্ম্য চলছেই।

সাধারণ বনপ্রহরী থেকে ভারপ্রাপ্ত বিট কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়ে তিনি গাছ পাচার ও লুটপাটে জড়িয়ে পড়েছেন।

বিষয়টির ওপর ২০১৯ সালের ১৮ জুন ও চলতি বছরের ১০ জুন আলোকিত নিউজ ডটকমে দুটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার ঘোষ ঘটনাগুলো তদন্ত করেন।

অভিযোগ উঠেছে, মাহমুদার রহমানকে কয়েক মাস আগে বদলি করেও স্বার্থের খাতিরে বহাল রাখা হয়েছে। এসিএফের তদন্তও স্বচ্ছ হয়নি।

গাছ পাচার : গত ২০১৯ সালের ৩০ মে বিকেলে জাতীয় উদ্যানের ২ নম্বর গেট দিয়ে পিকআপ বোঝাই করে আকাশমনি গাছ পাচার করা হয়। রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা হয়ে কাপাসিয়া রোডে যাওয়া পিকআপটির পেছনে ‘বন বিভাগ’ লেখা মোটরসাইকেলে করে একজন কর্মচারী পাহারা দেন।

১৬ জুন দুপুরে ৩ নম্বর গেটের ভেতর দিয়ে অর্কিড রেস্ট হাউজের পাশে দুটি বড় আকাশমনি গাছ কাটতে দেখা যায়। অর্কিডের পশ্চিমে জলাশয়ের পাশে ও লেকের পাড়ে কিছু গাছের মোথা আবর্জনা ও কাদামাটি দিয়ে লেপটে দেওয়া হয়।

এ দিন যে পাঁচজনকে গাছ কাটতে দেখা গেছে, তারাই ৩০ মে গাছ পাচারকালে পিকআপের ওপরে বসা ছিলেন।

আরও পড়ুন : গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্ক থেকে ‘গাছ পাচার’!

মাহমুদার রহমান আলোকিত নিউজকে বলেছিলেন, সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জহির উদ্দিন আকনের মৌখিক অনুমতিতে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছগুলো কাটা হচ্ছে। পরে নিলামে বিক্রি হবে।

কিন্তু ১৬ জুন প্রত্যক্ষ করা গাছগুলো ঝড়ে পড়ে গেছে-এমন কোন আলামত দেখা যায়নি। তা ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতীত গাছ কাটারও সুযোগ নেই।

লুটপাট : উদ্যানের ৬ নম্বর গেটের ভেতর দিয়ে মাইছা পুকুরের পাশে পরিত্যক্ত স্টাফ কোয়ার্টার ও এর দক্ষিণ পাশে বকুল কটেজ। মহামারি করোনা শুরুর পর স্থাপনা দুটি থেকে পুরনো টিন ও কাঠ খুলে বিক্রি করা হয়।

এসব কিনে নিয়ে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এলাকায় উদ্যান সংলগ্ন যাত্রী ছাউনির পাশে অবৈধভাবে একটি দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। যা এখনো বহাল আছে।

এ ছাড়া কোয়ার্টারের পাশের পাম্প হাউজ থেকে একটি বড় ও দামি ডিপ মেশিন উধাও হয়ে গেছে। যা বিশেষ করে উদ্যানের পুকুরে পানি দেওয়ার কাজে ব্যবহার হত।

আরও পড়ুন : গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্কে ‘করোনার সুযোগে’ লুটপাট (ভিডিও)

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, উদ্যানের পুকুর থেকে অবৈধভাবে মাছ ধরে বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি বদলি হয়ে যাওয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রেজাউল করিমও নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন।

কথিত প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি : মাহমুদার রহমানের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোকিত নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেই তিনি দৈনিক খোলা কাগজে কথিত প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালান। যদিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত এভাবে টাকা খরচ করে বিজ্ঞপ্তি ছাপানো নিয়মবহির্ভূত।

সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার মদদে প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি ছাপানো হয় বলে প্রচার রয়েছে। সরকারি সম্পদ রক্ষায় সুষ্ঠু তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

জানতে চাইলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজল তালুকদার আলোকিত নিউজকে বলেন, আমি তাকে কৈফিয়ত তলব করেছি, সংশোধন করেছি। আমার লোক নেই, বিট তো চালাতে হবে।

আরও খবর