গাজীপুরের বাউপাড়া বিটে বন দখল করে ফিলিং স্টেশন!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের মেসার্স রহমান ফিলিং স্টেশনের বিরুদ্ধে সংরক্ষিত বনভূমি দখলের তথ্য মিলেছে।

জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাউপাড়া বিটের গজারিয়াপাড়া এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর বাংলাবাজার রোডের পাশে ফিলিং স্টেশনটি অবস্থিত। এর সামনের অংশসহ চার পাশেই বনভূমি।

স্থাপনা অংশে জমির পরিমাণ প্রায় আধা বিঘা। বনভূমি দখল করে নির্মিত হয়েছে দুই পাশের সংযোগ সড়ক ও প্রাঙ্গণের কিছু অংশ।

দখল পোক্ত করতে গত কয়েক দিন ধরে রাস্তা ও প্রাঙ্গণ আধা পাকা এবং সামনের অংশে প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে।

কাজ চলার এই ছবিটি গত ২২ মে তোলা

পেছনে গিয়ে দেখা যায়, আগের গজারি বন এখন ফাঁকা। জন্মাচ্ছে না নতুন গাছ। রোপিত দুটি আকাশমনি চারাও ভেঙে ফেলা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির মালিক গাজীপুর শহরের কাজী আবদুল হান্নান। তিনি ২০১৬ সালে এটি গড়ে তুলেন।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী, জাতীয় উদ্যান থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত কোর জোন। এর মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা পরিচালনা নিষিদ্ধ।

অথচ জাতীয় উদ্যান থেকে ফিলিং স্টেশনটির দূরত্ব এক কিলোমিটার। আইন লঙ্ঘন হলেও মিলেছে অনুমোদন।

এলাকাবাসী জানান, প্রতিষ্ঠানটির সামনের অংশে কিছু গজারি গাছ ছিল। রাতের আঁধারে লোক দিয়ে কেটে তা দখল করা হয়।

ঘটনার সময় বিট কর্মকর্তা ছিলেন এমদাদুল হক ও রেঞ্জ কর্মকর্তা ছিলেন সদ্য অবসরে যাওয়া আবুল হাসেম।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, ওই কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই সবকিছু করা হয়েছে। এর আগে মালিক জমিতে প্রবেশের রাস্তা না থাকলেও কৌশলে ডিমারকেশন বাগিয়ে নিয়েছেন।

বনভূমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার রাসেল আলোকিত নিউজের কাছে দাবি করেন, কোন নির্মাণ কাজ করা হয়নি। সঠিকভাবে ব্যবসায় তারা পদকপ্রাপ্ত।

ঘটনাটি বর্তমান বিট কর্মকর্তা আজাদুল কবিরকে জানালে তিনি আলোকিত নিউজকে বলেন, কাজ করছে কি না, আমার জানা নেই। আমি গিয়ে দেখব।

ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জারের দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলাবাজার রোডটাই বনের মধ্য দিয়ে গেছে। ফিলিং স্টেশনের সামনে গাছ ছিল কি না, আমি শুনিনি।

সর্বশেষ অবস্থা জানতে শুক্রবার আজাদুল কবিরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল ধরেননি।

একজন বন কর্মকর্তা বলেন, ডিমারকেশন বাতিল করে বনভূমি উদ্ধার করা উচিত। ডিএফও জহির উদ্দিন আকন রাস্তাটি দিয়ে বন পরিদর্শনে যান বিধায় এটা তারও অজানা থাকার কথা নয়।

আরও খবর