কালিয়াকৈরে বন দখল করে বনফুল বাজার, উচ্ছেদের উদ্যোগ চাপা!
আলোকিত প্রতিবেদক : সংরক্ষিত গজারি বনের গাছ কেটে ধীরে ধীরে গড়ে উঠল বাজার। এখন ধীরে ধীরে দোকান বাড়ছে।
একাধিকবার উচ্ছেদের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। করা হয়েছিল ৪৩ দখলদারের তালিকা।
সেই তালিকা রহস্যজনক কারণে চাপা পড়ে আছে। বাজারের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে বন ও পরিবেশ।
ঢাকা বন বিভাগের অধীন গাজীপুরের কালিয়াকৈর রেঞ্জের মৌচাক বিটের দক্ষিণ ভান্নারা এলাকার বনফুল বাজারের চিত্র এটি।
সরেজমিনে জানা যায়, মৌচাক-ভান্নারা সড়ক সংলগ্ন বনফুল মোড়ের পশ্চিম পাশে কয়েক বছর আগে গজারি বন ছিল। কয়েকজন লোক প্রথমে গাছ কেটে দোকান নির্মাণ শুরু করেন। পরে তাদের দেখাদেখি বনে ভিটি পাকা টিনশেড দোকান বাড়তে বাড়তে বনফুল বাজার গড়ে ওঠে।
সেখানে মুদি দোকান, চায়ের দোকান, মুরগির দোকান, ফার্মেসি, খাবার হোটেল, কাপড়ের দোকান, মোবাইলের দোকান, কসমেটিকসের দোকান ও জেনারেটরের দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা চলছে। উত্তর দিকে আলিব গার্মেন্টসের রাস্তার পাশেও কিছু দোকান করা হয়েছে। অবৈধ দোকান এখন অর্ধশতাধিক।
বাজারটির পশ্চিম পাশে দেড় বিঘা জমিতে ২০১৪-১৫ সালে আকাশমনি বাগান সৃজন করে বিট অফিস। বাগানের ভেতরে প্রতিনিয়ত পলিথিনসহ দোকানগুলোর বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে আবর্জনার স্তূপ জমে ঘটছে মাটি দূষণ। ক্রমান্বয়ে মারা যাচ্ছে গাছ, ব্যাহত হচ্ছে বনের স্বাভাবিক বিকাশ।
রাস্তার পূর্ব পাশে জোত জমিতে নির্মিত মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে বনের গাছ কেটে দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ছোট-বড় দেড় শতাধিক গজারি গাছ কাটা হয়েছে। কিছু গাছ ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে আছে।
তারা আরও জানান, বন কর্মকর্তারা সুযোগ দেওয়ায় এভাবে অন্তত এক বিঘা বনভূমি দখল হয়েছে। ওই স্থানে এক শতাংশ জমির বর্তমান বাজারমূল্য ৮-১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে দখলীয় জমির মূল্য দাঁড়ায় প্রায় তিন কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ২০২০ সালে ৪৩টি দোকান উচ্ছেদের তালিকা করা হয়েছিল। বিট কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান মানিক যোগদানের পর আবার তালিকা করা হয়। পরে ব্যবসায়ীরা মিলে টাকা দিলে প্রক্রিয়া আটকে যায়। উচ্ছেদের বদলে বাড়তে থাকে দোকান।
বিট কর্মকর্তা মানিক এখন একই রেঞ্জের কালিয়াকৈর চেকপোস্টে আছেন। তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল ধরেননি।