গাজীপুরের কাশিমপুরে ‘বনের বুক চিরে’ গ্যাস কারখানার রাস্তা!
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের কাশিমপুরে সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে গ্যাস কারখানার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
ঢাকা বন বিভাগের কালিয়াকৈর রেঞ্জের কাশিমপুর বিটের বড় ভবানীপুর এলাকায় এ অপরাধ সংঘটিত হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিট অফিসের কাছে জিরানী বাজার রোডের উত্তর পাশে গজারি বনের ভেতর দিয়ে একটি হাঁটাচলার রাস্তা। অল্প এগোতেই চোখে পড়ল স্টিল মিল সংলগ্ন নতুন আরেকটি রাস্তা। বনের মধ্য দিয়ে তৈরি ১০ ফুট প্রস্থের ও অন্তত ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের রাস্তাটিতে বালু ফেলা হয়েছে।
রাস্তার অপর প্রান্তে বালু ফেলে আনুমানিক পাঁচ বিঘা কৃষি জমি ভরাট করা হয়েছে। সেখানে তরল গ্যাস প্রক্রিয়াজাত কারখানা এসেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাসেস লিমিটেডের ইউনিট-২ স্থাপনের কাজ চলছে। বনের ওপর দিয়ে নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
কারখানাটির পূর্ব পাশ ঘেঁষে সংরক্ষিত গজারি বন ও পশ্চিম পাশ ঘেঁষে আকাশমনি বাগান। উভয় পাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। তবে কোথাও ডিমারকেশনের খুঁটি পাওয়া যায়নি।
হিসাব করে দেখা যায়, কারখানার রাস্তা তৈরির ফলে সাড়ে চার শতাংশ বনভূমি বেহাত হয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
কারখানার ম্যানেজার পরিচয়ে রেদোয়ান আহমেদ আলোকিত নিউজকে বলেন, মালিকের নাম তার জানা নেই। স্থানীয় আনোয়ার হোসেন মৃধা সব দেখাশোনা করছেন।
জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন মৃধা আলোকিত নিউজকে বলেন, কারখানার মালিক অনেক, একজনের নাম নূরুল আমিন। ডিমারকেশনসহ সব করা আছে।
রাস্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাস্তা জোতে, পাশ দিয়ে কিছু অংশ বনে পড়েছে। অনেক সাংবাদিক এসেছিল, তারা দেখে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই কারখানার কাজ কয়েক মাস ধরে চলছে। বিট অফিসের সাথে মোটা অঙ্কের টাকায় রফাদফা হয়েছে বলে প্রচার রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা বনি শাহাদত হোসাইন আলোকিত নিউজকে বলেন, বিট কর্মকর্তা এমদাদুল হকের সময়ে মালিক ডিমারকেশন করেছেন। ডিমারকেশনে হাঁটাচলার জন্য ওই রাস্তা দেখানো হয়েছে। নির্মাণ কাজের জন্য অনাপত্তিপত্র লাগবে না।
একজন বন কর্মকর্তা বলেন, বন ঘেঁষে কারখানা স্থাপন করতে হলে বন বিভাগের অনাপত্তিপত্র লাগবে। নিজস্ব বা রেকর্ডের রাস্তা না থাকলে অনাপত্তিপত্র দেওয়ার সুযোগ নেই। হাঁটাচলার রাস্তা আর কারখানার ভারী যানবাহন ও মালামাল পরিবহনের রাস্তা এক কথা নয়।
তিনি আরও বলেন, কারখানাটিকে রাস্তার সুযোগ দেওয়ায় বন ও পরিবেশ-প্রতিবেশ ব্যবস্থার বড় ক্ষতিসাধন হয়েছে। ভবিষ্যতে ক্ষতি আরও বাড়বে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।