গাজীপুরে স্ত্রীকে নির্যাতন : মামলা করায় ব্যাপক হুমকি, পুলিশ নীরব

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে স্ত্রীর ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের পাঁয়তারা করছেন স্বামী।

অভিযুক্ত আবদুল কাইয়ুম দোহা (৩৫) সিলেটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মৃত আবদুল খালিকের ছেলে।

নির্যাতিত নুরজাহান আক্তার বর্তমানে গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানার তালটিয়া গ্রামের আশিসের বাড়ির ভাড়াটিয়া।

এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করা হলেও আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই।

ভুক্তভোগী নুরজাহান আলোকিত নিউজকে জানান, দোহার সাথে তার প্রায় তিন বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১০ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়েতে দোহা তার পরিবারের কাউকে রাখেননি। পরে পরিচয় করাবেন, বাড়িতে নিবেন-এমনটি বললেও গত প্রায় এক যুগেও তিনি শ্বশুরবাড়ি দেখেননি।

প্রথম কয়েক বছর ভালোভাবেই সংসার চলছিল। দোহা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে চাকরি করতেন। পরে ব্যবসার কথা বলে স্ত্রীর কাছ থেকে দুই দফায় পাঁচ লাখ টাকা নেন।

এরপর দোহা একটি প্রাইভেটকার কিনেন। জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকজন মিলে ক্রয়কৃত জমিতে সাত তলা বাড়ি করেন। হঠাৎ তার পরিবর্তন শুরু হয়। চলতে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

গত এপ্রিলে কুলাউড়ার সুচি নামের এক মেয়ের সাথে দোহার পারিবারিকভাবে বিয়ের তারিখ ঠিক হয়। নুরজাহান বিষয়টি জানতে পেরে নানাভাবে বিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেন।

গত ২৭ এপ্রিল বিকেলে দোহার ছোট ভাই আবদুল গাফফার তোহা ও মামা কামরুল ইসলাম তাদের বাসায় আসেন। তারা নুরজাহানকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি রাজি না হওয়ায় ওই পাত্রীর পরিবারকে খরচ বাবদ দেওয়ার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।

এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা নুরজাহানকে চুলের মুঠি ধরে কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন। দোহা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানের মাংসপেশিতে মোচর দিয়ে জখম করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় নুরজাহান তিনজনকে আসামি করে পূবাইল থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর ১ (৫) ২২।

এদিকে মামলা করায় নুরজাহানকে তালাক দেওয়ার ও দেখে নেওয়ার ব্যাপক হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি ভয়ে মীরের বাজারে তার বিউটি পারলার খুলতে পারছেন না।

নুরজাহান অভিযোগ করেন, আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। গত ১৮ মে চারটি নম্বর উল্লেখ করে থানায় সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে। ডাইরি নম্বর ৭৫৯। কিন্তু পুলিশ কিছুই করছে না।

নুরজাহান আরও বলেন, দোহা তাকে সর্বশেষ গত ২৮ মে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন। তিনি গোপন সূত্রে জানতে পেরেছেন, পারলার বা বাসায় লোক দিয়ে ইয়াবা বা অন্য কিছু রেখে তাকে ফাঁসানো হতে পারে।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল আউয়াল আলোকিত নিউজকে বলেন, আসামির মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় ট্র্যাকিং করা যাচ্ছে না। কুলাউড়া থানায় কাগজ পাঠানো হয়েছে। জিডির বিষয়টি তার জানা নেই।

আরও খবর