গাজীপুরের গজারিয়া পাড়া ও মনিপুরে ভুয়া ডাক্তারের দৌরাত্ম্য
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের গজারিয়া পাড়া ও মনিপুরে দুই ভুয়া ডাক্তারের দৌরাত্ম্য থামছে না।
অভিযুক্তরা হলেন ইসমাইল হোসেন মোল্লা ওরফে বাহাদুর ও আজিজুল হক জয়নাল।
তাদের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে জনসাধারণ আর্থিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, মহানগরীর রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তার পশ্চিমে গজারিয়া পাড়ার গাজী মার্কেটে বাহাদুরের ফার্মেসি ও চেম্বার। সাইনবোর্ডে নামের আগে ডাক্তার। নিচে ডিগ্রি হিসেবে ডিএএমএস, ডিএমএস ও ডিএমটি।
সাথে চর্ম, যৌন, এলার্জি, ডায়াবেটিস, লিভার, নাক, কান, গলা এবং মা ও শিশুরোগসহ সর্বরোগের বিশেষজ্ঞের বিশেষণ।
বাহাদুর প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রোগী দেখেন। বাসা চেম্বারের পেছনেই। তার কাছে আশপাশের শিল্প কারখানার শ্রমিক পরিবার বেশি যায়। ফি নেন ২০০-৩০০ টাকা।
সেখানে তার ব্যবসা চলছে ১০ বছর ধরে। তিনি চোরাই সরকারি ওষুধও বিক্রি করেন। তার ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্সও নেই।
অথচ বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের আইন অনুযায়ী, এমবিবিএস ও বিএমডিসির সনদ ছাড়া ডাক্তার শব্দ ব্যবহার ও প্রেসক্রিপশন করা দন্ডনীয় অপরাধ।
অপরদিকে জেলা সদরের মনিপুর বাজারের পূর্ব পাশে ইউটা গার্মেন্টসের সাথে জয়নালের মা মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কেয়ার সেন্টার। নামের আগে ডাক্তার। নিচে ডিগ্রি চারটি। ডিএমএ, ডিইউএমএস, টিএইচসিএইচ ও ডিএইচএমএস।
ডিএমএ ছাড়া বাকি তিনটির পাশে লেখা অধ্যয়নরত। বিশেষজ্ঞ সেজে চলছে ব্যবসা। কারখানার শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের লোকজন না বুঝে তার কাছে যাচ্ছেন।
ইউটা গার্মেন্টসের শ্রমিক আবদুস সোবহান অভিযোগ করেন, তিনি যৌন সমস্যায় ভুগছিলেন। পরে জয়নালের কাছে গেলে তাকে প্রেসক্রিপশনে লিখে ও হাতে তৈরি করা ওষুধ কয়েক দফা দেওয়া হয়। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
সোবহান আলোকিত নিউজকে বলেন, জয়নাল আমার কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার ওষুধ খেয়ে আমার কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। আমি এখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে ভুয়া ডাক্তার বাহাদুর ও জয়নালের সাথে যোগাযোগ করলে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে ওই দুজনের প্রতারণা নিয়ে এরই মধ্যে আলোকিত নিউজ ডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর জয়নালের কাহিনি প্রকাশিত হলে চলে ব্যাপক তোলপাড়। পরে তিনি আরেকটি পত্রিকায় প্রতিবাদ দিয়ে ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।