মুক্তারুজ্জামান মুক্তির কবিতা ‘নেশা’
নেশা
-মুক্তারুজ্জামান খাঁন মুক্তি
দাদা করল নেশা
হুক্কাতে কলকির মাথায় তামুক দিয়ে
হুক্কার পানি শব্দ করে গড়গড়িয়ে
চাপা আগুন জ্বলে তামুকে।
দাদার মুখের সাদা ধোঁয়া যায় উড়িয়ে
রাজার বেশে বসে থাকে মন ভুলিয়ে
নুয়ে গেছে বয়সের ভারে
হুক্কা টানে দিনে-রাত্রে
দাদা কাশে খুলখুলিয়ে।
দেখতে দেখতে দাদার স্বভাব
বাবাও গেল নেশার ভিড়ে
সেই হতে খাইতে তামুক বিড়ি
লোকের ভিড়ে আমায় ডেকে বলে
কইরে খোকা তোর মা
বোকা ডেকে বললাম আগুন দিতে।
তামাক আমার বিড়ির ক্ষিধে
একটু আগুন দাও
আমি লাগাব বিড়ির মুখে
নেশা হচ্ছে মনটা কষা
খাইলে হবে মনটা ঠাসা।
তামাক বিড়ি নেশার পাতা
খাইতো মেতে হরহামেশা
বড় হলাম নেশার পাশে
তামুক বিড়ি হুক্কা দেখে।
মায়ের কাছে বসে বাবা
টানতো বিড়ি ভাব করিয়ে
পুরুষগিরির ভাব ধরিয়ে
বৃদ্ধ আবাল চারদিকে
সবার নেশা দেখে দেখে
বড় হলাম এই সমাজে।
সবার কীর্তি দেখে দেখে
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
নেশার মধ্যে যাই ডুবিয়ে।
বন্ধুদের মাঝে সেই হতে
নিতাম আমি সিগারেট মুখে
আমায় বলতো কিছু বন্ধু
এই সবতো ছোট্ট নেশা
কত নেশা আছে ভবে
নষ্ট জীবন রঙিন করবে
যত কষ্ট আছে মনে
সব দুঃখ যাবে মুছে।
এই জীবনে নেশা ছাড়া সবই মিছে
নেশা বলতে অদ্ভুত কিছু
জটাবাঁধা গাজর পাতা
আফিম গাছের কফিন মূলে
ধূসর রঙের পাউডারকে হেরোইন বলে।
গোলাপি রঙের পিলগুলো
নিদ্রাহীন বাবা বলে
পচা-গলা রস চিবিয়ে
বহু বছর রাখে ফেলিয়ে
তাকে বলে বিদেশি মদের রঙিন তাড়ি।
খাইলে হয় যে মাথাটা ভারী
তবে তুমি বুঝবে শেষে
রঙিন স্বপ্ন দেখবে হেসে
ক্ষণ সময়ে দুঃখ যাবে ভুলে।
বিপথগামী পথটি ধরে
লক্ষ-কোটি তরুণ ছেলে
মা-বাবাকে যায় যে ভুলে।
নেশার মাঝে অর্থকড়ি
তরুণরা সব যায় বিলিয়ে
ধীরে ধীরে সম্পদ যায় ফুরিয়ে
অবশেষে কষ্টগুলো ভুলতে গিয়ে
গলায় দড়ি দেয় ঝুলিয়ে।
অবক্ষয় ও অবনতি
ভাল সমাজ গড়তে ভীতি
শপথ নিব সবাই মিলে
নেশাকে না বলিয়ে
আমরা সবাই নেশামুক্ত সমাজ গড়ি।