গাজীপুরে ৫ কোটি টাকার বনভূমিতে মন্ডলের ১০ তলা!
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে বনের জমিতে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করছে প্রভাবশালী শিল্প প্রতিষ্ঠান মন্ডল গ্রুপ।
ভাওয়াল রেঞ্জের ভবানীপুর বিটের শিরিরচালার বাঘের বাজার এলাকায় কয়েক মাস ধরে চলছে এ দখলযজ্ঞ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে মন্ডল ইন্টিম্যাটস পোশাক কারখানা অবস্থিত। কারখানাটির পূর্ব পাশে ১০ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে নতুন ভবনের কাজ চলছে।
সেখানে জমির পরিমাণ ৪৫ শতাংশ। মাহনা ভবানীপুর মৌজার এসএ ৬৭৫ নং দাগের ওই জমি বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত।
স্থানীয়রা বলছেন, বাঘের বাজার এলাকায় বিঘাপ্রতি জমির বর্তমান বাজারমূল্য চার কোটি টাকা। সে হিসাবে দখলীয় জমির মূল্য দাঁড়ায় পাঁচ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ডল গ্রুপ ২০১৬ সালে একটি ডিমারকেশন করে। তাতে বন বিভাগকে পক্ষ করা হয়নি। দক্ষিণ পাশে রাস্তা থাকায় ভাওয়ালগড় ইউনিয়ন পরিষদকে পক্ষ করা হয়। কৌশলে গোপন করা হয় বনভূমির তথ্য।
জানতে চাইলে বিট কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আলোকিত নিউজকে বলেন, তারা ডিমারকেশন বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছেন। দখলের ঘটনায় পিওআর মামলা করা হয়েছে।
ওয়াকিবহাল একজন বলেন, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহির উদ্দিন আকন গরিবের টিনের ঘর ভেঙে বাহবা কুড়াচ্ছেন। কিন্তু বড় দখল বা অট্টালিকার ব্যাপারে তার ভূমিকা রহস্যজনক।
তিনি আরও বলেন, মন্ডল গ্রুপ অবাধে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বন কর্মকর্তারা উচ্ছেদ না করে শুধু মামলা দিয়ে দায় সারছেন।
মন্ডল গ্রুপের ডিজিএম সোহেল রানা আলোকিত নিউজকে বলেন, আমাদের জমির টোটাল ক্লিয়ারেন্স নেওয়া। গেজেটের বিষয়টি ঠিক জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, বন বিভাগের সাথে আগে থেকেই একটি মামলা হাইকোর্টে চলছে। এটা আমাদের ল্যাণ্ড ডিপার্টমেন্ট জানে।
পরে ল্যাণ্ড ডিপার্টমেন্টের সাথে কথা বলতে মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি দেবেন বললেও আর কোন সাড়া দেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মন্ডল গ্রুপের এমডি আবদুল মমিন মন্ডল হাইকোর্টে একটি রিট করেছেন। রিট নম্বর ৮৯১৬। এতে ওই জমি নিজেদের বলে দাবি করা হয়।
পরে হাইকোর্ট গত জুলাইয়ে রুল জারি করেন। বন বিভাগ এরই মধ্যে রুলের জবাব দিয়েছে। ওই জমি পার্ট দাগভুক্ত নয়, সরাসরি গেজেট।
এ ব্যাপারে ভাওয়াল রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল হাসেমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক সাইফুল ইসলাম ও প্রতিবেদক মেহেদী হাসান সবুজ)