গাজীপুরে কোর জোনে বনিটো : গাছ কেটে বন সাবাড়

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে বনিটো বাটন কারখানার দখল ও দূষণে উজাড় হচ্ছে বনভূমি।

ভাওয়াল রেঞ্জের বিকেবাড়ি বিটের ডগরী রোড এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ঘটছে এ ঘটনা।

অথচ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী, কোর জোনে কারখানা স্থাপন ও পরিচালনা দণ্ডনীয় অপরাধ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ডগরী রোডের উত্তর পাশে গজারি বনের ভেতরে বনিটো বাটন কারখানা অবস্থিত। এটি তিন দিক থেকেই বনের ক্ষতি করছে।

কারখানার মালবাহী গাড়ি চলাচলের রাস্তা করা হয়েছে বনভূমি দখল করে। ইতিপূর্বে বিট অফিস দুটি খুঁটি পুঁতলেও তা তুলে ফেলা হয়।

বনভূমি দখল করে রাস্তা

কারখানাটির পূর্ব পাশে মরে গেছে বেশ কিছু গাছ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে আরও গাছ মরার উপক্রম হয়েছে।

এ ছাড়া গাছ কেটে দখল করা হয়েছিল আধা বিঘা বনভূমি। পরে সাবেক বিট কর্মকর্তা কাজী সাইফুল ইসলাম মাপজোখ করে তা উদ্ধার করেন।

পশ্চিম পাশের অবস্থা গুরুতর। কারখানার পাউডার ও ভুসি ছড়িয়ে পড়ছে বনে। দূষণ ঘটছে মাটি ও পরিবেশ-প্রতিবেশের।

সেখানে অবাধে কাটা হচ্ছে গাছ। চোখে পড়ল প্রায় অর্ধশত গাছের মোথা। উজাড় হয়েছে প্রায় এক বিঘা বনভূমি।

কারখানাটির কর্মকাণ্ডের ওপর আগে থেকেই নজর রেখেছিল আলোকিত নিউজ। ধারণ করা হয় অতীত ও বর্তমানের ছবি।

রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উজাড় হওয়া অংশে ছোট ছোট চারা রোপণ করেছে বিট অফিস। বর্জ্যের স্তূপের অংশ ফাঁকা। মৃত দাঁড়িয়ে আছে অন্তত ২২টি গাছ।

এক প্রকার ঘাসে ঢাকা পড়েছে কেটে নেওয়া গাছের মোথা। এই পরিবেশে চারাগুলোর বৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দূষণের মধ্যেই চারা রোপণ

অপরদিকে কারখানার জেনারেটরের শব্দও বিকট। এতে বন্যপ্রাণীর বিচরণ ও বংশ বিস্তার হুমকির মুখে পড়েছে।

এ ছাড়া কারখানাটি পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগের ছাড়পত্র ছাড়াই পেয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। কিন্তু বন কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছেন।

জানতে চাইলে কারখানার জিএম জাকির হোসেন আলোকিত নিউজকে বলেন, আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য চেষ্টা করছি। নিউজ না করে সহযোগিতা করেন।

গাছ কাটা ও মরে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু গাছ এমনিতেই মরেছে। বাইরের কেউ গাছ কেটে নিয়ে যেতে পারে।

এ ব্যাপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল হাসেম আলোকিত নিউজকে বলেন, তিনি বিট কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে কথা বলে দেখবেন।

সংশ্লিষ্ট একজন জানান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহির উদ্দিন আকন বিপুল পরিমাণ বনভূমি উদ্ধারের তথ্য প্রচার করছেন। নেপথ্যে উজাড় হচ্ছে বিঘার বিঘা বনভূমি।

আরও খবর