গাজীপুরের মনিপুর বিটে বনভূমি দখলের হিড়িক
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের মনিপুর বিটে মূল্যবান বনভূমি দখলের হিড়িক পড়েছে।
ঢাকা বন বিভাগের অধীন রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে চলছে এ দখলযজ্ঞ।
বিনিময়ে স্থানীয় বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, বিট কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ যোগদানের পর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বনভূমি দখল বেড়েছে। লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করছেন বনপ্রহরী জয়নাল।
মনিপুর মধ্যপাড়া এলাকার এসএ ৩০৪ নং দাগের জমি বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত। সেখানকার মিঞ্জুরি বাগানের পাশে পাঁচ গন্ডা নয় শতাংশ জমি কিনেন মিরপুরের ব্যবসায়ী ইউসুফ।
পরে তিনি জানুয়ারির প্রথম দিকে ছয় রুমের পাকা বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তাদের কারও ডিমারকেশন নেই।
জমি বিক্রেতা শামসুল হক আলোকিত নিউজকে জানান, ইউসুফের কাজে বিট অফিস একবার বাধা দিয়েছিল। পরে তারা কথা বলায় আর সমস্যা হয়নি।
কাতলামারা দীঘির চারপাশে সংরক্ষিত বনভূমি দখল ও বিক্রি করা হচ্ছে। গড়ে উঠেছে খাসপাড়া।
কামরুজ্জামান হরাইজন সোয়েটার ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। তিনি খোরশেদের কাছ থেকে নতুন করে তিন গন্ডা জমি কিনেছেন।
সেখানে বারান্দার দুটিসহ পাঁচটি ঘর করেছেন। আগেও একটি বাড়ি করে ভাড়া দিয়েছেন।
রহিম মোল্লা পাঁচ গন্ডা জমিতে ১৪টি ঘর করে ভাড়া দিয়েছেন। নতুন করে প্রায় দুই গন্ডা জমি কিনে আরেকটি বাড়ি করছেন।
কাজল মিয়া তিন গন্ডা জমি কিনেছেন দয়াল মিয়ার কাছ থেকে। আগে ঘর করেছেন তিনটি। দুই মাস আগে বারান্দার দুটিসহ আরও পাঁচটি ঘর করা হয়েছে।
দানেছ খান আকাশমনি বাগানের ভেতরে তিন গন্ডা জমি কিনেছেন। তার বারান্দাসহ দুটি ঘরের কাজ চলছে।
প্রায় চার গন্ডা জমিতে বাড়ি করেছেন বিধবা সোনাবান। মাস খানেক আগে আরও তিনটি ঘর করা হয়েছে।
বাবলু দর্জি দুই-তিন মাস আগে তিনটি ঘর করেছেন। আগে ছয়টি ঘর করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বিল্লাল খান তিন গন্ডা জমি কিনে বাড়ি করেছেন। তিন-চার মাস আগে আরও তিনটি ঘর করা হয়েছে।
দীঘির উত্তর পাশে গজারি বনের ভেতরে জামাই দেলোয়ারের বাড়ি। তিন মাস আগে আরও তিনটি ঘর করেছেন।
তিনি এখন কামরুজ্জামানের বাড়ির পাশে আরেকটি বাড়ি করছেন। বারান্দার একটিসহ তিনটি ঘরের কাজ চলছে।
শেফালি নতুন দুটি ঘর করেছেন। বারান্দা পাকা করতে ঘরের সামনে খোয়া স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
এভাবে চাঁন মিয়া ঘর করেছেন তিনটি। বন ঘেঁষে বিল্লাল হোসেন ট্যাংকিসহ ঘর করেছেন তিনটি।
ঘরগুলো করার পর টিনের বেড়ায় আলকাতরা ও রং দেওয়া হচ্ছে। যাতে নতুনের বদলে পুরনো দেখায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বনের দালাল রশিদ ও জামাই দেলোয়ার বিট অফিসের সাথে মধ্যস্থতা করছেন। টাকা ছাড়া ঘর তো দূরের কথা, টয়লেটও করা যায় না।
তারা আরও জানান, বনপ্রহরী জয়নাল টাকার জন্য হুমকি-ধমকি দেন। কেউ কেউ ৫০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। পাকা বাড়ির ক্ষেত্রে গুনতে হয় লাখ টাকা।
জানতে চাইলে বনপ্রহরী জয়নাল আলোকিত নিউজকে বলেন, তারা তো বন কেটে ঘর করছে না। এগুলো অনেক আগের। বাগানের ভেতরে কোন ঘর নেই।
এ ব্যাপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা আতাউর মজিদ আলোকিত নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি দেখব।