শ্রীপুরে ‘ডিমারকেশন জটিলতায়’ মিথ্যা বন মামলার ছড়াছড়ি
সাদেক মিয়া, শ্রীপুর : গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া গ্রামের মো. শাহজাহান (৫৫) তিন বছর আগে বসতঘরের ছাউনি পরিবর্তন করছিলেন। তখন বন বিভাগের লোকজন মামলা দিয়ে তাকে আদালতে চালান করেন।
শাহজাহান জানান, তারা কেওয়া মৌজার এসএ ১৫০১ নং দাগের সম্পত্তির মালিক। বন বিভাগ তাতে এক একর জমি দাবি করে জোতদারদের সকল কাজে বাধা প্রদান করছে।
ভাংনাহাটির সহকারী অধ্যাপক এমদাদুল হক জানান, শ্রীপুর মৌজার ১৭৬৬ নং দাগে মোট জমি ৯০ একর। সেখানে বন বিভাগের দাবি দুই একর ৩৫ শতাংশ। কিন্তু স্থাপনা নির্মাণ করলে বিট অফিস পুরো জমিতেই বাধা দেয়।
তার বাবা মৃত আলাউদ্দিনসহ পরিবারের ডজন খানেক সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা বন মামলা দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগ ডিমারকেশন করে জমি আলাদা না করায় তারা বিশেষ প্রয়োজনেও জমি বিক্রি করতে পারছেন না।
আক্তার হোসেন জানান, তিনি এসএ ১৭৯৫ নং দাগে ছয় মাস আগে বসতঘর তৈরির কাজ শুরু করেন। তিন ফুট উঁচু দেয়াল নির্মাণের পর বিট অফিস বাধা দেওয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে।
দক্ষিণ ভাংনাহাটির সিরাজ উদ্দিন (৬০) জানান, তিনি সরকারের কাছ থেকে ১৯৯৩ সালে এক একর ৫৮ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত পান। বন বিভাগ জমিতে আপত্তি জানালে তিনি রেকর্ড সংশোধনের মামলা করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিট অফিস তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা বন মামলা ঠুকে দেয়। এর আগে চারটি হয়রানিমূলক মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
এভাবে গাজীপুর তথা শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বন বিভাগ গেজেটমূলে তাদের জমি দাবি করছে। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ না করায় জটিলতা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে।
শনিবার বিকেলে এসবের প্রতিবাদে পৌর মুক্তমঞ্চে ভুক্তভোগীরা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে সমাবেশের আয়োজন করেন।
এতে জটিলতা নিরসনে সীমানা নির্ধারণ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তদন্ত ছাড়া মামলা আমলে না নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ শামছুল আরেফীন বলেন, শ্রীপুরে বন বিভাগের প্রায় ২২০০ একর ভূমি রয়েছে। বন বিভাগের যে ভূমি, তা সরেজমিনে পাওয়া যাচ্ছে না।
বিভিন্ন জোতদারের দখলে রয়েছে বলে বন বিভাগ দাবি করছে। এসব কারণে সরকারি নির্দেশে নামজারি ও খাজনা ২০০৭ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে।