কাপাসিয়ার রায়েদ ইউনিয়নে ‘করোনার ত্রাণে’ কারচুপি!
আলোকিত প্রতিবেদক : মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপে কর্মহীন ও দরিদ্র মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বরাদ্দ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনিয়নটিতে এ পর্যন্ত দুবার ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান শফিকুল হাকিম মোল্লাহ হিরণ মেম্বারদের সাথে সমন্বয় না করে পছন্দের লোক দিয়ে বিতরণ করছেন।
ফলে অনেকে সরকারের আপদকালীন সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিতরণ কার্যক্রম মনিটরিংয়ে প্রশাসনের তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না।
পিআইও শফিউর রহমান জোয়ার্দ্দার আলোকিত নিউজকে বলেছেন, করোনা শুরুর পর প্রথমবার প্রতি ইউনিয়নে ১৮০ প্যাকেট ও রোজার এক দিন আগে ২০০ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।
১৮০ প্যাকেটের প্যাকেজে ছিল জনপ্রতি ১০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক লিটার সয়াবিন তেল ও তিন কেজি আলু। আর ২০০ প্যাকেটের প্যাকেজে ছিল ১০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল ও দুই কেজি আলু।
কয়েকজন ত্রাণ গ্রহীতা জানান, তারা চাল ১০ কেজির স্থলে সাত-আট কেজি, ডাল এক কেজির স্থলে আধা কেজি ও আলু তিন কেজির স্থলে পেয়েছেন এক-দুই কেজি। তেল পাননি।
তারা আরও বলেন, কিছু লোক তেল পেয়েছেন। চাল, ডাল ও আলুর ক্ষেত্রে বেশি কারচুপি হয়েছে। চেয়ারম্যান স্বচ্ছতার সাথে বিতরণ করলে এমনটি হত না।
বালুচরা গ্রামের সিএনজি চালক মোসলেহ উদ্দিন আলোকিত নিউজকে বলেন, আমি ১০ কেজি চাল, আধা কেজি ডাল ও এক কেজি আলু পেয়েছি। তেল পাইনি।
দিনমজুর জিয়াউল হক বলেন, তিনি রোজার আগের দিন ত্রাণ পেয়েছেন। খোলা প্যাকেটে চাল ছিল আট-নয় কেজি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, যাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে, তাদের তালিকা ধরে তদন্ত করলে আসল চিত্র বেরিয়ে আসবে।
১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার (হাইলজোর) আবদুল মোতালিব আলোকিত নিউজকে বলেন, ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম হয়েছে। ভয়ে মানুষ মুখ খুলে না। আমার আশপাশে গরিব মানুষ আছে, তারা ত্রাণ পায়নি।
৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার (বিবাদীয়া ও রায়েদ) বোরহান উদ্দিন আলোকিত নিউজকে বলেন, আমার মাধ্যমে প্যাকেট বিতরণ করা হয়নি। ১০ টাকা কেজিসহ অন্য কর্মসূচিতে থাকা কয়েকজনও ত্রাণ পেয়েছেন। তেল কেউ পেয়েছেন, কেউ পাননি।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান হিরণ মোল্লাহ আলোকিত নিউজকে বলেন, ত্রাণ কত প্যাকেট আসছে, পিআইওর সাথে যোগাযোগ করলে বেটার হয়। এত খেয়াল থাকে না।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এক দিন তেলসহ আসছে, আরেক দিন তেল আসেনি। অভিযোগ থাকতেই পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমত আরা আলোকিত নিউজকে বলেন, আমার এখান থেকে চাল এক ছটাকও কম যায়নি। অভিযোগ পেলে ছাড় দিব না।