গাজীপুরে ডিমারকেশন ছাড়াই নিচু জমি ভরাট করছে ‘বনখেকো’ প্যারাগন!
আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুর সদরের বানিয়ারচালা এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ করছে বনভূমি জবর দখলকারী প্যারাগন গ্রুপ।
আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে এসব চললেও বন কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, ভাওয়াল রেঞ্জের ভবানীপুর বিট এলাকায় গড়ে ওঠা প্যারাগন গ্রুপ বন বিভাগের তালিকাভুক্ত অন্যতম জবর দখলকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সময়ে মাহনা ভবানীপুর মৌজার কয়েকটি দাগের অন্তত ৫ একর ১৬ শতাংশ বনভূমি দখল করেছে।
দখলীয় বনভূমিতে নির্মাণ করা হয়েছে পোলট্রি ও হ্যাচারির টিনশেড এবং পাকা স্থাপনা। ইতিপূর্বে অর্কিড ফুল বাগানের সমানের অংশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।
প্যারাগনের মাটি ভরাটের চিত্র-২
প্রতিষ্ঠানটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে নিচু জমি ভরাট করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পাশে বনভূমি থাকলেও যৌথ ডিমারকেশন করা হয়নি।
চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মাটি ফেলে দেড় বিঘারও বেশি ভরাট করা হয়েছে। এতে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, বনভূমি দখলকারী প্রতিষ্ঠানের ডিমারকেশন ছাড়া সম্প্রসারণ বা নির্মাণ কাজ করার সুযোগ নেই। আর ডিমারকেশন পেতে হলে অবশ্যই স্বেচ্ছায় বনের জমি ছেড়ে দিতে হবে।
প্যারাগনের মাটি ভরাটের চিত্র-৩
প্যারাগন গ্রুপের একজন দাবি করেন, তারা বনভূমি দখল করেননি। নতুন সম্প্রসারিত অংশের ডিমারকেশন করে কাজ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভবানীপুর বিটের চলতি দায়িত্বে থাকা বারুইপাড়া বিট কর্মকর্তা আবুল কালাম সামসুদ্দিন আলোকিত নিউজকে বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে প্যারাগন মাটি ভরাট করেছিল। এখন বন্ধ আছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুদ রানা আলোকিত নিউজকে বলেন, প্যারাগন ডিমারকেশনের আবেদন করেছে। তাদেরকে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। বনের জমি না ছাড়লে ডিমারকেশন পাবে না। মাটি ভরাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্যারাগনের মাটি ভরাটের চিত্র-৪
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্যারাগনের মাটি ভরাটের কাজ বাস্তবে বন্ধ হয়নি, চলমান আছে। সরাসরি রেঞ্জ অফিসের সঙ্গে চুক্তি করে কাজ করা হচ্ছে।
একজন বন কর্মকর্তা বলেন, জবর দখলকারী প্রতিষ্ঠানকে আইনি চাপে রেখে বনভূমি উদ্ধার করতে হয়। কাজ শেষ হয়ে গেলে তাদের বন বিভাগের দ্বারস্থ না হলেও চলে। এসব ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরি।
আরও পড়ুন : গাজীপুরে প্যারাগনের দখল থেকে ১০ শতাংশ বনভূমি উদ্ধার